ঝিনাইদহে সিজারের ৮ দিন পর বের হলো গজ/ব্যান্ডেজ/রক্তমাখা কাপড়
ঝিনাইদহের চোখ-
পেটের মধ্যে রক্ত পরিস্কার করা (মফস) কাপড় রেখেই এক সিজারিয়ান রোগীর পেট সেলাই করেছে ডাঃ আনিছুর রহমান নামে এক চিকিৎসক। কোটচাঁদপুর শহরের সিটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
সিজারের ৮ দিনের মাথায় ঝিনাইদহ শহরের আল-আমিন ক্লিনিকে আবার দ্বিতীয় দফা অপারেশন করে ওই রোগীর পেটের মধ্যে থাকা রক্তমাখা কাপড় বের করা হয়। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে।
রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তুলেছেন।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চোরকোল গ্রামের পিকুলের সন্তানসম্ভবা মেয়ে রুনা খাতুন সিজারের জন্য ভর্তি হয় কোটচাঁদপুর শহরের সিটি ক্লিনিকে। গত ২০ মার্চ সেখানে সিজার করেন জীবননগরের (আদি বাড়ি মাগুরা) চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমান। সিজারের সময় রোগীর পেটের মধ্যে মফস রেখে সেলাই করা হয়।
রোগীর খালু বাবু মিয় জানান, কিছুদিন পর রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে ঝিনাইদহ শহরের সমতা ক্লিনিকে ডাঃ সোহেল আহম্মদের দিয়ে আলট্রাসনো করা হয়। রিপোর্টে পেটের মধ্যে কাপড়ের অস্তিত্ব মেলে। দ্রæত রুনা খাতুনকে শহরের হামদহ এলাকার আল-আমিন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
গত ২৮ মার্চ রোগীকে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করেন ডাঃ জাহিদ। গৃহবধু রুনা খাতুনের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে হলেও মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে দুইবার অপারেশন করায় আর্থিক ও রোগীর শরীরের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচ্য হয়ে দাড়িয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ডাঃ জাহিদ জানান, রোগীর পেট থেকে রক্ত পুজ ও মফস জাতীয় জিনিস বের করা হয়। তবে রোগী এখন সুস্থ। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের আরো সতর্ক ও সচেতন না হলে রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর সিটি ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর জানান, ডাক্তাররা তো অপারেশন করেই খালাস। কিন্তু ভুল চিকিৎসার পেক্ষিতে পরবর্তী ঝামেলা তো ক্লিনিক মালিকদেরই পোহাতে হয়। তিনি বলেন ক্লিনিকের পক্ষ থেকে রোগীকে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। তবে ভুল চিকিৎসার চিকিৎসক ডাঃ আনিছুর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। অফিস বন্ধ থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তিনি বলেন আগে ডাঃ ফাহিম উদ্দীন ও ডাঃ সোহলে রানা নামে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এরা হাটেবাজারে গজিয়ে ওঠা অবৈধ ক্লিনিকে অপারেশন করে রোগীর জীবনকে ঝুকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছিল। তারা চলে যাওয়ায় হয়তো ডাঃ আনিছ তাদের স্থান দখল করেছে। সিভিল সার্জন বলেন, দায়ী চিকিৎসক ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য কোটচাঁদপুরের সিটি ক্লিনিক সিভিল সার্জন অফিসের বন্ধ তালিকায় থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা আবার চালু করা হয়েছে।