ঝিনাইদহে একদিনে করোনা শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ১৩ শতাংশ
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহে রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় আজ ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫১ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
রোগীদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১৭ জন, শৈলকুপা উপজেলায় ১০ জন, হরিণাকুন্ডু উপজেলায় দুইজন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১০ জন, কোটচাদপুরে পাঁচজন এবং সীমান্ত সংলগ্ন মহেশপুর উপজেলায় সাতজন। প্রতিদিন শহর গ্রাম সর্বত্র রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
জেলা সিভিল সার্জনের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয় উপজেলায় এখন করোনা বেড়েই চলছে। সীমান্ত সংলগ্ন মহেশপুর উপজেলা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রশাসন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জামির মো. হাসিদুস সাত্তার বলেন, ‘পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। একজন মেডিকেল কর্মকর্তাসহ ৩৩ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা বাড়ি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভারত থেকে অবৈধ পথে যারা আসছে তাদের অধিকাংশের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিধিনিষেধ আরোপ থাকলেও ওই এলাকার মানুষ প্রতিদিন আশপাশের উপজেলায় যাতায়াত করছে। কিছুতেই তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। এর ফলে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন এ কর্মকর্তা। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।
এদিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিথিলা ইসলাম জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে বর্তমানে ৫৩০০ লিটার তরল অক্সিজেনসহ ১০০ কেজি ধারণ ক্ষমতার ৯০টি ও ছোট আকারের ১১০টি সিলিন্ডার রয়েছে। হাইফ্লো অক্সিজেন নেজাল ক্যানোলা আছে মাত্র ছয়টি।
ডা. মিথিলা আরও বলেন, ৫০ বেডের করোনা ওয়ার্ডে ভারত ফেরত দুইজনসহ আজ রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৭ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে স্থান সংকুলান হবে না।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় শৈলকুপা উপজেলার ব্রাহামপুর গ্রামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেলেন ৫৮ জন। জেলার কোনো হাসপাতালেই আইসিইউ সুবিধা নেই। সর্বত্র স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসপাতালের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি করোনা রোগী আসছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে। যার সঠিক হিসেব কারো কাছেই থাকছে না। তাদের মাধ্যমেও করোনা ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের তৎপরতা কামনা করছে সচেতন মহল।