পেট্রোলিয়াম জেলি আসলে কি?

শীত এসেছে তাই এখন কদর বেড়ে যাবে পেট্রোলিয়াম জেলির। কিন্তু কি এই পেট্রোলিয়াম জেলি? আমরা ত্বকের সুরক্ষায় কিংবা ঠোঁট ফাঁটা, পা-ফাঁটা ইত্যাদি প্রতিরোধে শীত এলেই ব্যবহার শুরু করি এই পেট্রোলিয়াম অথবা ভ্যাজলিন। কিন্তু একটু সাবধান না হলে এই সুরক্ষাকারী বস্তুতি হয়ে যেতে পারে ক্ষতির কারণ।
কয়েকটি রাসায়নিক উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি পেট্রোলিয়াম জেলি। এর প্রধান উপাদান হলো- হাইড্রোকার্বন যা হলো হাইড্রোজেন ও কার্বনের যৌগ বা অণু। আমরা যে মিথেন গ্যাস জ্বালাই, সেটি হাইড্রোকার্বন। গাড়িতে যে পেট্রল, অকটেন ইত্যাদি ব্যবহৃত হয় সেগুলোও হাইড্রোকার্বন। খাবারের তেল এমনকি মোমও হাইড্রোকার্বন।
পেট্রোলিয়াম জেলিতে বিভিন্ন ধরনের হাইড্রোকার্বন অণু থাকে। সেগুলোতে কার্বন সংখ্যা প্রায় পঁচিশ বা তারও অধিক। আর এইসব রাসায়নিক হাইড্রোকার্বণের মাধ্যমেই তৈরি আমাদের ত্বকে ব্যবহৃত ভেজলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি।
ত্বকে, পেট্রোলিয়াম জেলি একটি আবরণের মতো কাজ করে। ত্বকের কোষে যে পানি থাকে, তা বাষ্পীভূত হতে পারে না। ফলে ত্বক শুষ্ক হয় না। বিভিন্ন উদ্ভিদেও হাইড্রোকার্বনের এমন আবরণ দেখা যায়। কচুপাতা যে পানিতে ভিজে না, তার কারণ সেটাই।
একসময় পেট্রোলিয়াম জেলি সহজলভ্য ছিল না। মানুষ ত্বকের যত্নে তেল ব্যবহার করত। বাংলাদেশে নারিকেল ও সরিষার তেল একসময় বহুল প্রচলিত ছিল। সীমিত পরিসরে এখনও তেল ব্যবহৃত হয়। তবে আধুনিক নাগরিক জীবনে মানুষ এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুগন্ধি পেট্রোলিয়াম জেলিই ব্যবহার করেন।
পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহারে কিছু সতর্কতা:
পেট্রোলিয়াম জেলি আপনার ত্বকের ছিদ্রগুলোর ওপর আস্তরণ তৈরি করে ত্বককে আদ্রতা থেকে রক্ষা করে। কিন্তু অনেক সময় ধরে ব্যবহারের কারণে এটি ত্বকের ক্ষতিও করতে পারে ।
যাদের মুখে ব্রণ ও র্যাশ আছে তাদেরকে ভ্যাসলিন ব্যবহার না করারই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পেট্রোলিয়াম জেলির তৈলাক্তভাব আপনার ত্বকের সমস্যাগুলোক আরও জটিল করে তুলতে পারে।
ভ্যাসলিন ফুসফুসে গেলে তা লিপিড নিওমোনিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রতিদিন ভ্যাসলিন ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এমন পরামর্শই দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ঘরে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি পেট্রোলিয়াম জেলিকেই বেশি নিরাপদ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।