অন্যান্য

ঝিনাইদহ থেকে “ফিলিপাইন কালো আখ” চারা কিনে সফল শাহিন

 

ঝিনাইদহের চোখ-
আবু শাহিন (৩৫)। একজন তরুণ চাষি। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর গ্রামের বাসিন্দা। এবার ‘ফিলিপাইন কালো আখ’ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। মাত্র ৩ বছর আগেও ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

চাকরির সুবাদে ২০১৭ সালে তিনি ঝিনাইদহ জেলায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। পথে কালো আখ খেত চোখে পড়েছিল তার। আখ দেখে কৌতুহল জন্মেছিল। গাড়ি থেকে নেমে স্বাদ নেন। এরপর আখ চাষে আগ্রহ হয় তার। মাত্র ৩ হাজার টাকার ‘আখ বীজ’ কিনে পাঁচ শতক জমিতে শুরু করেন চাষ। এ জাতের আখ চাষে খরচ কম, তেমন কষ্ট নেই কিন্তু লাভ বেশি। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে শুরু করেন ফিলিপাইন আখের চাষ। ভাগ্য বদলে যায়।

আবু শাহিন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খাঁ পাড়া এলাকার নজিম উদ্দিন খাঁ’র ছেলে। বর্তমানে তিনি ৬ বিঘা জমিতে আখের চাষ করছেন। প্রতিবছর উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে শাহিন জানান, আখ চাষে বছরে একবার ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১২ হাজার পিস ফিলিপাইন আখের চাষ করা যায়। বিঘায় বীজ, সার, শ্রমিক ও আনুষঙ্গিক খরচসহ মোট প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি পিস আখ পাইকারি ৩৫ থেকে ৪৫ বা ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর খুচরা বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ বা ৭০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার আখ বিক্রি করতে পারেন কৃষক। ফলে খরচ বাদ দিয়ে বছরে কয়েক লাখ টাকা লাভ করতে পারেন তারা।

আবু শাহিন বলেন, ‘আগে ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানিতে চাকরি করতাম। চাকরির সুবাদে একবার ঝিনাইদহ ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে কালো আখ দেখে অবাক হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আগ্রহ হলো আখের স্বাদ নেওয়ার। খাওয়ার পর খুব ভালো লেগেছিল এবং আখ চাষে মন বসেছিল। পরে সেখান থেকে ফিরে মাত্র ৩ হাজার টাকার বীজ কিনে পাঁচ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছিলাম। চাষে খরচ কম, কষ্ট কম কিন্তু লাভ বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৮ সালে তিন বিঘা জমিতে চাষ শুরু করি। বর্তমানে ছয় বিঘা জমিতে আখের চাষ আমার। বিঘা প্রতি বছরে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর প্রায় নাড়ে ৪ লাখ টাকার আখ বিক্রি করি। বর্তমানে ৬ বিঘা জমিতে বছরে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। আর ২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকা আখ বিক্রি করি। খরচ বাদে প্রায় ২২ লাখ টাকা আয় হয়।’

এলাকার আরেক আখ চাষি সাইদুল খাঁ বলেন, ‘গত বছর থেকে আমিও দুই বিঘা জমিতে আখ চাষ করছি। প্রতিটি আখ ১০ থেকে ১২ ফুট লম্বা হয়। আর ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রেতা জমিতে এসে আখ নিয়ে যায়।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ‘কয়েক বছর আগে উপজেলায় সৌখিনভাবে আখ চাষ শুরু হয়েছিল। কিন্তু অধিক লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। দিনে দিনে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button