ঝিনাইদহের চোখ-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জাহিদ হাসান। দিনমজুর বাবার পক্ষে তার ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। ফলে এখন ভর্তি হতে পারবেন কিনা, সে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন জাহিদ।
জানা গেছে, ঢাবির খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ২৮৭ তম হন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে জাহিদ হাসান। বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কোচিং এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তার দিনমজুর বাবা। সেই ঋণ এখনো রয়ে গেছে। ফলে তার পরিবার এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।
জাহিদ ২০১৮ সালে সংসারের অভাব অনটনের মধ্যেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। এর আগে পিএসসি পরীক্ষায় রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ এবং রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। সর্বশেষ জাহিদ মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
জাহিদ গত দুই বছর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এসেছেন। সম্প্রতি ঢাবিতে ভর্তির জন্য পরীক্ষার ফরমের টাকাও একটি প্রতিষ্ঠান তাঁকে দিয়েছিল। কিন্তু ঢাকায় গিয়ে ভর্তি ও বইসহ অন্যান্য খরচ কিভাবে সংগ্রহ করবেন, সে বিষয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জাহিদ।
জাহিদ বলেন, পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করা তার স্বপ্ন। কিন্তু সে স্বপ্ন আর্থিক সংকটে আটকে যাবে এমন শঙ্কা করছেন।
জাহিদের বাবা শাহাজান আলী বলেন, আমার জমিজমা বলতে ভিটে বাড়ির পাঁচ শতক জায়গা আছে। আগে অটোরিকশা চালিয়ে ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করেছি এবং সংসার চালিয়েছি। আমার দুইটা ছেলে ও একটা মেয়ে আছে। ছেলে দুইটা খুব মেধাবী। আমি অনেক কষ্ট করে দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগাচ্ছি। এখন একটি ইট ভাঙার গাড়িতে কাজ করি। ছেলে দুইটা মানুষের মতো মানুষ হলে আমার সব কষ্ট সার্থক হবে।