ঝিনাইদহে ২২ মাথা খেজুর গাছের সন্ধান লাভ
ঝিনাইদহ চোখ-
অন্যের থেকে ভিন্নতা মানেই তা আলাদা বা ব্যতিক্রমী। অজপাড়াগাঁ এক গ্রামে মিলেছে আজব এক গাছের সন্ধান। একটি-দুটি নয় যার আছে ২২ টি মাথা। মাটিতে একটি মাত্র গাছ দাড়িয়ে থাকলেও উচু করে দাড়িয়ে আছে একাধিক মাথা। গাছের প্রত্যেকটি মাথাই আলাদা আলাদা সতেজ পাতা এখনও বিদ্যমান রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষই গাছটিকে একনজর দেখতে ভিড় করছেন।
গাছটির আনুমানিক বয়স প্রায় ৩০ বছর। এমন আজব গাছটির মালিক কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ানের বহরমপুর গ্রামের মৃত আবু তালেব মুন্সীর ছেলে ডাক্তার সলেমান মুন্সী।
সরোজমিনে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের একপাশে মেহগনি ও আম বাগানের এক কোনে ঠায় দাড়িয়ে আছে ২২ মাথা ওয়ালা খেজুর গাছটি। দেখে মনে হয় কোন শিল্পী নিপুন হাতে গাছের মাথা গুলো সাজিয়ে রেখেছে। অবাক করার বিষয় গাছটির মূলের চেয়েও ২২গুন মাথা নিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছে। একসময় রস আহরোন হলেও এখন তা আর হয় না। তবে এই বাগানে অন্যান্য গাছ থাকলেও মালিক ব্যতিক্রমী এই গাছটি এখনও কাটেননি।
প্রকৃতির এক বিচিত্র সৃষ্ট এই খেজুর গাছটির সন্ধান পাওয়া গেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায়। কুশনা ইউনিয়নের একেবারেই প্রত্যন্ত গ্রাম বহরমপুরে বাগানের প্রায় শতাধিক মেহগনি গাছের মধ্যে এই ২২ মাথার খেজুর গাছটির সন্ধান পাওয়া গেছে। এখনও জীবিত আছে ১৪টি মাথা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এ গাছটিকে একনজর দেখার জন্য দুর দুরান্ত থেকে আসছে দর্শণার্থীরা।
বহরমপুর গ্রামের কৃষক মোঃ আব্বাস আলী মন্ডল জানান, এই গাছটিতে অতিরিক্ত সাপে থাকতো। যার কারনে গাছ থেকে আর রস সংগ্রহ করতে পারেনা। আবার সাপের কারনে খেজুর গাছে ফল ধরলেও সেগুলো পাড়া যেতো না। গাছেই ফলপেকে নষ্ট হয়ে যেত। এভাবেই প্রথমে একটা দুইটা করে মাথা হতে থাকে। এসময় এতো মাথা হয় যে গুনতে পারা যেত না। এরপর কিছু মাথা মারা যায় এখন ১৪টি মাথা জীবিত আছে। তবে এই গাছটি দেখতে অনেক দূর থেকে লোকজন আসে।
গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, এই গাছটি অনেক দিন আগেই এমন হয়েছে। প্রথমে তিনটি মাথা হয়। তারপর আস্তে আস্তে অনেক মাথা হয়েছে। একসময় ওই মাথা গুলো থেকে রস আহরণের চেষ্টাও করা হয়েছে, কিন্তু কেউই পারেনি।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা থেকে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে আসা দর্শণার্থী জানান, এমন ঘটনা একেবারেই বিরল। আল্লাহর এক ব্যতিক্রমী নিদর্শন। আমরা গ্রামে আসলেই একবার হলেও এ গাছটি দেখতে আসি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গাছটিকে একনজর দেখতে মানুষ আসছে। প্রকৃতির এক অসাধারণ লিলা এই গাছটি।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আজগর আলী বলেন, এটি একটি জেনিটিক সমস্যা। হরমোন জনিত কারণে এক বীজপত্রি উদ্ভিদে একাধিক শাখা প্রশাখা হতে পারে। তবে সেটা হয় খুবই কম।