দাম্পত্য জীবন সুন্দর রাখার উপায়
ঝিনাইদহের চোখঃ
বিয়ের পরে প্রথম কিছুদিন স্বপ্নের মতো কেটে যায়। ধীরে ধীরে বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ে ব্যস্ততাও। জীবীকার প্রয়োজনে হয়তো দুজনকেই ছুটতে হয় যার যার কাজে। শারীরিক দূরত্ব থেকেই অনেক সময় জন্ম নিতে পারে মানসিক দূরত্ব। তখন একটুতেই ভুল বোঝাবুঝি এবং সেখান থেকেই ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা। তাই সুখি দম্পতি হিসেবে পরিচিত হতে চাইলে সম্পর্কের যত্ন নিতে জানতে হবে দুজনকেই-
যদি ব্যস্ততার কারণে দুজনকে দূরে থাকতে হয় তাহলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সচেতন হোন। দুজনে চাকুরিজীবী হলে এক বাসায় থেকেও সারাদিনে দেখা মেলে না হয়তো। সেক্ষেত্রে মনোবিদরা পরামর্শ দেন যোগাযোগের ক্ষেত্রে ‘ভার্বাল’ হতে। চেষ্টা করুন এসএমএস না করে ফোন করতে। প্রিয়জনের কণ্ঠস্বরের প্রতি মানুষের যে আসক্তি থাকে, কয়েকটা লেখা শব্দ তার পরিপূরক হয় না। তাই যোগাযোগের ক্ষেত্রে যত্নশীল হোন।
যেকোনো সম্পর্কেই বন্ধুত্ব থাকলে তা সবচেয়ে সুন্দর হয়। সম্পর্কে গোপনীয়তা যত কমবে, ততই সহজ হবে সম্পর্কের রসায়ন। ঝগড়াঝাটি মেটাতেও আলোচনার জায়গা প্রশস্ত রাখুন। ইগো সরিয়ে সহজ হোন আলোচনায়।
বিশেষ দিনগুলো মনে রাখুন। বিশেষ করে সঙ্গীর জন্মদিন বা নিজেদের বিয়ের তারিখ- উপহার দিতে পারুন বা না পারুন অন্তত ভুলে যাবেন না। বরং সে দিনটা নিজেদের মতো করে কাটানোর প্রস্তাব দিন। বাড়ির যেকোনো অনুষ্ঠান বা ঘরোয়া আড্ডায় অতিথিদের সঙ্গে সময় কাটানোর মাঝেই টুকটাক খেয়াল রাখুন তারও। এতে সঙ্গী আপনার কাছে তার গুরুত্বের বিষয়ে নিঃসন্দেহ থাকবেন।
শত ব্যস্ততার ভিড়েও কিছুটা সময় অন্তত শুধুই দুজনের জন্য রাখুন। সেসময় একসঙ্গে গল্প করতে পারেন, চাইলে টিভি দেখা বা যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। বছরে দুয়েকবার বেড়িয়ে আসুন দুজন মিলে। পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে এই চেনা পরিবেশের বাইরে গিয়ে ক’টা দিন একসঙ্গে কাটিয়ে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মাঝে মাঝে পরস্পরের কাজের চাপ কমাতে সঙ্গীর কাজ নিজেই করে দিন। এমনিতেই ছেলেদের কাজ, মেয়েদের কাজ বলে সাংসারিক কাজে কোনো প্রভেদ হয় না। সেই ভেদাভেদ তৈরি করে নিই আমরাই। সম্পর্কে নতুন মশলা যোগ করতে পরস্পরের কাজে সাহায্য করুন।
চেষ্টা করুন দিনের মধ্যে অন্তত একটা বেলা একসঙ্গে বসে খেতে। খাওয়ার সময় নানা পারিবারিক আলোচনা, গল্প ও হাসিঠাট্টায় পরিবেশ হালকা যেমন হয়, তেমনই সঙ্গীর খাওয়ার পরোয়া না করে নিজে খেয়ে নিলেন, এমন অভিমানও কমানো যায়।
সুস্থ ও স্বাভাবিক পারিবারিক জীবন বজায় রাখতে যৌন জীবনের ভূমিকা বিরাট। মানসিক উদ্বেগ কমাতেও এর জুড়ি নেই। তাই শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী সুস্থ যৌন জীবন বজায় রাখুন। যৌনতার সময় যৌথ ইচ্ছা ও চাহিদাকেই গুরুত্ব দিন।