ঈসালে সওয়াব: কী ও কেন
ঝিনাইদহের চোখঃ
ঈসালে সওয়াব। আরবী শব্দ। ঈসাল শব্দের অর্থ পৌঁছানো, সংযুক্তকরা। সওয়াব অর্থ প্রতিদান, প্রতিফল, পুরস্কার। বাংলা ভাষার মানুষ সওয়াব বলতে ইবাদাতের প্রতিদানকেই বুঝে। অতএব, ঈসালে সওয়াব অর্থ ইবাদাতের প্রতিদান বা পুরস্কার অন্যের কাছে পৌঁছানো।
মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত ও তার মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য তার আত্মীয়স্বজন কিংবা অন্য কারো পক্ষ হতে নেক আমলের সওয়াব প্রেরণ করাকে বলা হয় ঈসালে সওয়াব।
কোনো মানুষ ইহকালের সংক্ষিপ্ত জীবন শেষে যখন মৃত্যুবরন করে, তখন সে সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে অক্ষম ও অসহায় পড়ে।
নিজের অক্ষমতা ও অসহায়তার পাশাপাশি পাথেয় স্বল্পতা দেখে মৃত ব্যক্তি দিশেহারা হয়ে পড়ে। তাই সে সর্বাত্মকভাবে জীবিত আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব থেকে সাহায্য, সহযোগিতা কামনা করে। আর সে সহযোগিতার একমাত্র উপায় হল ঈসালে সওয়াব।
কুরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী জীবিতদের পাঠানো দোয়া-ইস্তেগফার ও দান-খয়রাতের সওয়াবের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা মৃত ব্যক্তিকে বিপদমুক্ত করে দিতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে হয়রত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন
‘মানুষ মারা যাওয়া মাত্রই তার সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ৩টি আমলের ধারা চালু থাকে।
১. সদকায়ে জারিয়া।
২. এমন ইলম যার দ্বারা উপকার হয়।
৩. নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’
(সূত্র: মুসলিমঃ ১৬৩১, তিরমিযী: ১৩৭৬)
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদিস বর্ণিত আছে, প্রিয় নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
‘কবরে মৃত ব্যক্তির অবস্থা ঠিক ওই ডুবন্ত ব্যক্তির মত, যে জীবন রক্ষার জন্য সাহায্যের আশায় চিৎকার ও ফরিয়াদ করতে থাকে। আর পিতামাতা, বন্ধু-বান্ধবদের দোয়ার অপেক্ষা করতে থাকে। অতপর সে যখন জীবিতদের দোয়া পেয়ে যায়, তখন প্রেরিত দোয়া তার নিকট দুনিয়ার সমুদয় বস্তু হতে অধিক প্রিয় মনে হয়। মহান আল্লাহ এই দোয়ার বরকতে মৃতের উপর পাহাড় পরিমাণ রহমত ও মাগফিরাত দান করেন (সূত্র: শোয়াবুল ঈমান : ৫৭২৭)।