পাঠকের কথা

শেষ হলো ২৫, এভাবেই কর্মজীবন শেষ করতে চাই—–আশাবুল হক

শেষ হলো ২৫, এভাবেই কর্মজীবন শেষ করতে চাই—–আশাবুল হক

আজ আমার কর্মজীবনের ২৫ বছর পূর্ণ হলো অর্থাৎ চাকুরী জীবনের রজত জয়ন্তী। মনে পড়ছে চাকুরি জীবনে প্রথম দিনের কথা। সবে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। ব্র্র্র্যাক এর মতো একটি ইন্টারন্যাশনাল এনজিওতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে গেলাম। ১৯৯৩ সালের ২৭ অক্টোবর মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার ব্র্যাকের এরিয়া অফিসে যোগদান করলাম। শুরু হলো উন্নয়ন সেক্টরে কাজ করা। চাকুরী কি, আমিই বা কি করতে চাই সে সময়ে ঠিক বুঝতাম না। যশোর ব্র্যাক টার্কে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে কিছুটা দক্ষতা সঞ্চার করে কাজ করতে থাকলাম। সমাজের পিঁছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে কাজ করছি, তদুপরি মন অন্য কিছু চাইছিলো। অনুভব করছিলাম নিজ সমাজ তথা নিজ এলাকার মানুষের প্রতি কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকাকে জীবন বলে না। অবস্থা ভেদে, ব্যক্তি ভেদে জীবনের অর্থ ভিন্ন। পরিস্কার বুঝতে পারলাম, উন্নয়ন সেক্টরে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ সবচেয়ে বেশি। ফলশ্রুতিতে ব্র্যাকে কিছুদিন কাজ করার পর আমার প্রাণের শহর চুয়াডাঙ্গা ও এলাকার স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘‘জনকল্যাণ’’ সংস্থায় একটি কর্মসূচির প্রধান হিসাবে কাজ করার সুযোগ আসলো। দিন যত যেতে থাকে উন্নয়ন সেক্টরের ভেতরের কাজগুলি সম্পর্কে তত অবগত হই এবং আমার আগ্রহ আরো বাড়তে থাকে। উন্নয়ন সেক্টরের কাজে আমার ভীষণ আনন্দ ও বিশেষ অনুভূতি অনুভূত হতে থাকে। আর সে কারণে আমি অন্য কোনো সেক্টরে কাজের চেষ্টাও করিনি। আমার মেধা, মনন, ও মানসিকতার সম্পূর্ণ প্রয়োগ করতে থাকি। নিজ এলাকায় প্রায় ৮ বছর অতিক্রান্তের সময় পারিবারিক একটি মর্মান্তিক ঘটনার কারণে আমার ব্যক্তি জীবন চরম হুমকির মুখে পড়ে যায়। তখন আমি জনকল্যাণ ছেড়ে এইড ফাউন্ডেশন ঝিনাইদহে যোগদান করি। প্রথম দিকে অস্থিরতায় সময় কাটছিলো কিন্তু এইড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জনাব তারিকুল ইসলাম পলাশ এর সান্নিধ্য পেয়ে আমার মনোভাব পাল্টাতে থাকে। ধীরে ধীরে মনে হতে লাগলো এতোদিন আমি যা চেয়েছি বোধহয় তাই পেতে চলেছি। তার মানসিকতা, সাহসিকতা, বুদ্ধিদীপ্ততা, ব্যতিক্রমী চিন্তা-ভাবনা, হার না মানা এবং মানুষের জন্য কিছু করার আকাঙ্খা আমাকে আকৃষ্ট করতে থাকে। আলাপচারিতায় আমি তার কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতাম এবং অভিভূত হতাম। মনে হতো এমন একজনকেই আমার পথ প্রদর্শক হিসেবে চেয়েছি এবং তাই পেয়েছি, যা অদ্যাবধি বিদ্যমান। শুধু তাই নয় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জনাব আমিনুল ইসলাম বকুল এর নিকট থেকেও পেয়ে চলেছি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা। এমনইভাবে পথ চলার দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর আমি এইড ফাউন্ডেশনে কাজ করে চলেছি। কর্মক্ষেত্রে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে, পেয়েছি সহকর্মীদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা। এভাবেই কর্মজীবনের শেষ অবধি সকল সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। এই মাহেন্দ্রক্ষণে সকলের দোয়া কামনায়——-

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button