কিংবদন্তি চলচ্চিত্র প্রযোজক ইফতেখারুল আলম আর নেই
ঝিনাইদহের চোখঃ
‘তার হাত ধরেই ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম রঙিন ছবি ‘সঙ্গম’ নির্মিত হয়। যার পরিচালক ছিলেন জহির রায়হান। তার হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রি পেয়েছে অনেক প্রখ্যাত সিনেমা, জন্ম নিয়েছেন অনেক প্রযোজক।
ষাট দশক থেকেই নামি দামি পরিচালক ও তারকা শিল্পীরা তার প্রযোজনায় কাজ করে পেয়েছেন নাম-যশ-খ্যাতি। তার অভাব কোনোদিন পূরণ করতে পারবে না এই দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন।’
চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশক এবং প্রদর্শক ইফতেখারুল আলমের মৃত্যুতে শোক জানাতে গিয়ে এভাবেই তার সম্পর্কে কথা বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা আহমেদ শরীফ। ইফতেখারুল আলম সম্পর্কে আহমেদ শরীফের ফুফা।
কিংবদন্তি প্রযোজক ইফতেখারুল আলম। সিনেমার মানুষদের কাছে তিনি ইফতেখারুল আলম কিসলু নামে পরিচিত। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে আহমেদ শরীফ জাগো নিউজকে রোববার সকালে জানান, শনিবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগিত রাতে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ইফতেখারুল আলম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগি করেন।
দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
ব্যক্তিজীবনে তিনি আহমেদশ শরীফের ফুফু বেগম খোরশিদা আলমকে বিয়ে করেন। বেশ কয়েক বছর আগে স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন এই প্রযোজক।
আহমেদ শরীফ জানান, আজ রোববার (৬ জানুয়ারি) বাদ জোহর গুলশান ২- এ অবস্থিত আজাদ মসজিদে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
আহমেদ শরীফ বলেন, ‘বলা চলে পাকিস্তানে চলচ্চিত্রের শুরু থেকেই আমার ফুফা নিজেকে এই অঙ্গনে জড়িয়ে রেখেছিলেন। তিনি স্বাধীনতাপুর্ব সময়ে এদেশের সর্ববৃহৎ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘স্টার কর্পোরেশন’ তৈরি করে সিনেমা বানিয়েছেন। তার হাত ধরে অনেক প্রযোজক এসেছে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে তিনি যা দিয়েছেন তা কোনোদিন ভুলবার মতো নয়।
তার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই যেন আল্লাহ আমার ফুফাকে জান্নাত দান করেন।’
১৯৬৪ সালে তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম রঙিন ছবি ‘সঙ্গম’ প্রযোজনা করেন ইফতেখারুল আলম কিসলু। এরপর ১৯৬৬ সালে রাজ্জাক-সুচন্দা জুটির প্রথম ছবি ‘বেহুলা’ও নির্মিত হয় তার প্রযোজনায়।
স্বাধীনতার পর প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা ১১ জন’ও নির্মিত হয় তার প্রযোজনায়। এছাড়া তিনি ‘আনোয়ারা’, ‘আলিবাবা’ ও ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সংসার’র মতো অসংখ্য ছবি প্রযোজনা করেছেন।
এই বর্ষিয়াণ প্রযোজকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে।