বিয়ের আগে বর-কনের যে বিষয়গুলো জানা জরুরি
বিয়ে সামাজিক ও শরিয়তসম্মত বন্ধন। মানুষের চরিত্রকে সুন্দর ও নিরাপদ রাখতে, অবৈধ দৃষ্টি থেকে চোখকে হেফাজত করতে এবং লজ্জাস্থানের নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে বিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই দেনমোহর ধার্য সাপেক্ষে ইসলাম বিয়েকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।
বিয়ের মাধ্যমেই মুসলিম প্রজন্মের আবির্ভাব। বিয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয় মনের শান্তি, হৃদয়ের স্থিরতা, চরিত্রের পবিত্রতা ও জীবনের পরম সুখের ঠিকানা।
বিয়ে সম্পাদনের আগে বর-কনের ব্যাপারে অভিভাবকদের কিছু বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া জরুরি। বিয়ের পরে যেন মনের সুখ, হৃদয়ের শান্তি চোখের অশ্রুতে পরিণত না হয়। অশান্তির আগুণ জ্বলে না ওঠে।
তাই তো দেনমোহর নির্ধারণের পর বিয়ে পড়ানোর আগেও কাজী, ইমাম ও উভয়পক্ষের অভিভাবকরা বর-কনের গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো খোঁজ-খবর নেবেন তাহলো-
> বর-কনের বিয়ের মূল অভিভাবক শরিয়তসম্মত বৈধ ব্যক্তি কি না? তা জেনে নিতে হবে।
> রাষ্ট্রীয় আইনানুসারে বর ও কনে উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক কিনা তাও জেনে নিতে হবে।
> বরের একাধিক কিংবা ৪ স্ত্রী বর্তমান থাকাবস্থায় এটা পঞ্চম বিয়ে কিনা?
> বরের এটা একাধিক বিয়ে হলে আগের স্ত্রীর অনুমতি আছে কিনা?
> কনের আগে বিয়ে হয়েছে কিনা? বিয়ে হয়ে থাকলে সে সম্পর্ক এখনও বিদ্যমান আছে কিনা জেনে নিতে হবে।
> বর বা কনে যাদের বিয়ে হচ্ছে তারা মুসলিম কিনা তাও জেনে নিতে হবে।
> কনে বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্ত হলে ইদ্দত অতিবাহিত করেছে কিনা তাও জেনে নিতে হবে।
> কনে আগের স্বামীর ঔরসজাত সন্তান সম্ভববা কিনা তা জেনে নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে
> কনে যদি ইদ্দত পালন কিংবা সন্তান সম্ভবা হয় তবে ইদ্দত পালন ও সন্তান প্রসব করা ছাড়া বিয়ে বৈধ নয়।
> বর যদি বিবাহিত হয় তবে এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে বর্তমানে যাকে বিয়ে করছে সে কনে আগের স্ত্রীর বোন, ফুফু, বোনের মেয়ে কিংবা ভাইয়ের মেয়ে কিনা। যদি এদের কেউ হয় তবে এ বিয়ে বৈধ হবে না।
> কনে অন্যের স্ত্রী অবস্থায় বিদ্যমান আছে কিনা সেটিও বরের অভিভাবকসহ কাজী ও ইমামকে জেনে নিতে হবে।
> যদি কনে বিবাহিতা হয় তবে আগের স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে কিনা তা জেনে নিতে হবে।
সর্বোপরি কথা হলো
> বিয়েতে কনের সম্মতি অনেক বড় বিষয়। বিয়েতে তার সম্মতি আছে কিনা কাজী ও ইমামকে তা গুরুত্বের সঙ্গে জেনে নিতে হবে।
> বিয়ে বৈধ হওয়ার জন্য বর ও কনের উপযুক্ত সংখ্যক সাক্ষী আছে কিনা তা-ও জেনে নিতে হবে।
উল্লেখিত বিষয়গুলো ঠিক থাকলে খুতবা পাঠের মাধ্যমে অভিভাবক, কাজী কিংবা ইমাম বিয়ে পড়াবেন। খুতবায় পঠিত বিয়ে সংক্রান্ত কুরআনের আয়াত ও হাদিসের মর্মার্থ বর ও কনেকে বুঝিয়ে দেয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শান্তি ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন লাভে বিয়ের ক্ষেত্রে বর ও কনের উল্লেখিত বিষয়গুলো বর, কনে, অভিভাবক, ইমাম, কাজীসহ দায়িত্বশীল সবাইকে বিয়ের আগেই খোঁজ-খবর নেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।