ধর্ম ও জীবন

পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে সৃষ্টি করেছি। সুরা তীন : ৪

তিনি মানুষকে এমন কিছু গুণ দিয়েছেন তা পশু-পাখি কিংবা অন্য কোনো সৃষ্টির মধ্যে নেই। এ ধরনের একটি গুণ হল- অপরের প্রতি দয়া বা অনুগ্রহ করা। মানুষ কেবল মানুষের প্রতি দয়া করবে এমনটি নয়, বরং পশুপাখির প্রতিও দয়া প্রদর্শন করতে হবে। ইসলাম ধর্মে এ ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজনে ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এগুলোকে প্রকৃতি ও পৃথিবীর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসলাম। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে পশু-পাখির প্রসঙ্গ এসেছে। বিভিন্ন প্রাণীর নামে অনেকগুলো সুরারও নামকরণ করা হয়েছে।

যেমন সুরা বাকারা (গাভি), সুরা আনআম (উট, গরু, বকরি), সুরা নাহল (মৌমাছি), সুরা নামল (পিপীলিকা), সুরা আনকাবুত (মাকড়সা), সুরা ফিল (হাতি) ইত্যাদি।

এসব নামকরণ থেকে পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট ফুটে ওঠে। পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি খাবারদাবার ও প্রয়োজনে ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম এগুলোকে প্রকৃতি ও পৃথিবীর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রাণিকূল সৃষ্টির (অন্যতম) কারণ হলো, এগুলোতে তোমরা আরোহণ করে থাকো আর এগুলো সৌন্দর্যের প্রতীক।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮)

প্রাণিজগতকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কুরআনে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেক জাতি।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৩৮)

ইসলাম পশু-পাখির সঙ্গে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করার শিক্ষা দেয়। পশু-পাখির যথেচ্ছ ব্যবহারে নিষেধ করে। ইসলামে পশু-পাখির অঙ্গহানি করা নিষিদ্ধ।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ সা. ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৯৫)

প্রাণী প্রতিপালন করলে, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা ওয়াজিব বা অত্যাবশকীয়। মহানবী সা. বলেছেন, ‘এসব বাক্শক্তিহীন প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। সুস্থ অবস্থায় এগুলোতে আরোহণ করো, সুস্থ অবস্থায় আহার করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ২৫৪৮)

এভাবেই ইসলামে পশু-পাখির অধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মানুষের উচিত এসব দিকনির্দেশনা পুরোপুরি অনুসরণ করা। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button