টপ লিডশৈলকুপা

অস্কার বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশী, শৈলকুপার সাথে যার রক্তের সম্পর্ক

#ঝিনাইদহের চোখঃ

নাফিস বিন জাফর একজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী সফটওয়্যার প্রকৌশলী এবং অ্যানিমেশন বিশেষজ্ঞ। নাফিস প্রথম বাংলাদেশী ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে অস্কার পুরষ্কার জেতেন। হলিউডের পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড চলচ্চিত্রে ফ্লুইড অ্যানিমেশনের জন্য সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল বিভাগে ডিজিটাল ডোমেইন নামে ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস ডেভেলপার কোম্পানির হয়ে দুই সহকর্মী ডাগ রোবেল ও রিয়ো সাকাগুচি সাথে নাফিস এ পুরস্কার জেতেন।

জেনে নেই নাফিস বিন জাফর সম্পর্কেঃ—

জন্ম ৮ অক্টোবর ১৯৭৮
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তা: বাংলাদেশী
শিক্ষা: স্নাতক, সফটওয়্যার প্রকৌশল
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কলেজ অব চার্লসটন
পেশা: সফটওয়্যার প্রকৌশলী
কার্যকাল : ২০০০-বর্তমান
নিয়োগকারী: ড্রিম ওয়ার্কস অ্যানিমেশন
যে জন্য পরিচিত: প্রথম অস্কার বিজয়ী বাংলাদেশী
পিতা- জাফর বিন বাশার
মাতা- নাফিসা জাফর

জন্ম ও শিক্ষাজীবন:

নাফিসের জন্ম ১৯৭৮ সালের ৮ অক্টোবর, ঢাকায়। তার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি জেলায়। তার বাবার নাম: জাফর বিন বাশার এবং মায়ের নাম: নাফিসা জাফর। তিনি সম্পর্কে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও পাপেট নির্মাতা মুস্তাফা মনোয়ারের নাতি, জাতীয় স্মৃতি সৌধের স্থপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেন তার মামা। প্রয়াত কবি ও লেখক গোলাম মোস্তফার মেয়ে রাসিদা হক তার নানী। সে সুত্র অনুযায়ী শৈলকুুপার সাথে নাফিসের রয়েছে নাড়ির সম্পর্ক।

কর্মজীবন:

গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর নাফিসের মূলত ক্যারিয়ার শুরু হয় প্রোগ্রামার হিসেবে, আমেরিকার দক্ষিণ ক্যারোলিনার ‘কলেজ অফ চারলেস্টন’ থেকে । পরবর্তীতে ‘NASA’র জন্য একটা প্রোগ্রাম বানানোর মধ্য দিয়ে প্রোগ্রামিং -এর প্রতি একটা বিশেষ ভালোবাসা অনুভূত হয় নাফিসের মধ্যে ।

এরপর ১৯৯৮ তে মাত্র বিশ বছর বয়সে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর এই অসাধারণ ট্যালেন্টেড ছেলে নাফিস যোগ দেন ‘ডিজিটাল ডোমেইন’ নামের একটা কোম্পানীতে । এই প্রতিষ্ঠানে থাকা অবস্থাতেই তিনি আবিষ্কার করেন ‘ফ্লুইড সিম্যুলেশন’ (Fluid Simulation) নামে একটা অ্যানিমেশন টুলের । ‘ফ্লুইড সিম্যুলেশন’ হলো এমন এক ধরনের কম্পিউটার গ্রাফিক্স টুল যার ব্যবহারে ‘পানি’, ‘আগুন’ কিংবা ‘ধোঁয়া’র মতো পদার্থের দ্বারা সৃষ্ট কোন অ্যানিমেশন কয়েকগুন জীবন্ত মনে হবে ! নাফিসের এই আবিষ্কারে তার সহযোগী ছিলেন আরেক দুইজন সফটওয়্যার ডেভেলপার ‘ডউগ রোবল’ এবং ‘রায়ো সাকাগুচি’ । নাফিস ও তাদের সহযোগীদের আবিষ্কৃত এই বিশেষ গ্রাফিক্স টুলটি ব্যবহৃত হয় ২০০৭ -এ মুক্তি পাওয়া তৎকালীন সময়ের অন্যতম আলোচিত চলচ্চিত্র ‘Pirates of the Caribbean : At Worlds End’ -এর স্পেশাল ইফেক্টে ! এর ফলাফল স্বরূপ পরের বছর পেয়ে যান অস্কারের ‘সায়েন্টিফিক এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাওয়ার্ড’ নামে বিশেষ এক পুরস্কার, যা তার গোটা ক্যারিয়ারকেই সম্পূর্ন বদলে দেয় ।

পেয়ে যান স্টিভেন স্পিলবার্গের প্রতিষ্ঠান ‘Dreamworks Animation’ -এ কাজ করার সুযোগ । সিনিয়র প্রোডাকশন ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন ‘Shrek Forever After’, ‘Megamind’, ‘Kung Fu Panda 2’, ‘Puss in Boots’, ‘Madagascar 3’, ‘The Croods’… এর মতো কিছু অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রে । এছাড়াও কাজ করেন… ‘Stealth’, ‘Flag of Our Fathers’, ‘The Seeker’, ‘2012’, Percy Jackson and the Olympians’… এর মতো কিছু চলচ্চিত্রেও ! পাশাপাশি ‘Tron’ এবং ‘Transformers 2’ চলচ্চিত্রের স্পেশাল ইফেক্টের জন্যও নির্মান করেন বেশ কিছু অ্যানিমেশন ।

এবং সম্প্রতি নাফিস এবং তার সহযোগী স্টিভেন মার্শাল -এর যৌথ আবিষ্কৃত আরো একটি স্পেশাল ইফেক্টের বিশেষ গ্রাফিক্স টুল – বুলেটের উপর বেইস করে দুটি বড় স্কেলে ‘ডেস্ট্রাকশন সিম্যুলেশন সিস্টেম’ -এ বিশাল অবদানের জন্য ‘অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস (অস্কার)’ কর্তৃপক্ষ ‘Technical Achievement Award’ হিসেবে এবছর তুলে দিলো বিশেষ এক অস্কার পুরস্কার, নাফিস বিন জাফর এবং তার সহযোগী স্টিভেন মার্শাল -এর হাতে ।

চলচ্চিত্রসমূহ

মাদাগাস্কার ৩: ইউরোপ’স মোস্ট ওয়ান্টেড (প্রধান প্রকৌশলী)
পুস ইন বুটস (জৈষ্ঠ সফটওয়্যার প্রকৌশলী )
কুংফু পান্ডা ২ (জৈষ্ঠ সফটওয়্যার প্রকৌশলী )
মেগামাইন্ড (জৈষ্ঠ প্রোডাকশন প্রকৌশলী )
শ্রেক ফরেভার আফটার (জৈষ্ঠ প্রোডাকশন প্রকৌশলী )
পার্সি জ্যাকসন এ্যান্ড দ্য লাইটেনিং থিফ (সফটওয়্যার প্রকৌশলী )
দ্য সিকার: দ্য ডার্ক ইজ রাইজিং
পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড
ফ্ল্যাগস অফ আওয়ার ফাদার
স্টিল্‌থ্‌
দ্য ক্

পুরস্কার ও সম্মাননা

একাডেমি পুরস্কার, (২০০৭)।

পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড
একাডেমি পুরস্কার।

তথ্যসূত্র :ইন্টারনেট

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button