পাঠকের কথা

ধুসর জীবন——-সালমা ইসলাম

ধুসর জীবন—–সালমা ইসলাম

স্বপ্ন দেখে গাঁয়ের মেয়ে হুরমতি
অন্য পাঁচটা কিশোরীর মত করে,
বিদ্যা বুদ্ধিতে বড় হয়ে বড় মানুষ হবে
অসুস্থ বাবা বিছানায় পড়ে দিন দিন
অভাব যেন জেকে বসে মাথা গোছার ঠাই
বাড়ি টুকু ছাড়া সব গেছে তার বাবার অসুখে।
উপা্র্জনক্ষম একমাত্র মা মানু‌ষের বাড়ি কাজ করে
যা আনে এক বেলা এক মুটো খাইলে অন্য বেলা উপোস
হুরমতির মা মেয়েরে জড়িয়ে ধরে কয়,
মারে এভাবে কয়দিন বাচন থাকা যায়
তোর বাপের ভিটা বেইচা তোরে বিয়া দিয়া দিই
দুইডা ভাত খাইয়া তো মরদের ঘরে বাইচা থাক।

যৌতুকের বিনিময়ে পাশের গাঁয়ে বিয়ে হলো হুরমতির
পূর্ণ যুবতী হাওয়ার আগেই সাড়ে তের বছরে মা হলো কিশোরী হুরমতি

অপরিপক্কতায় নানা রোগও বাসা বাধল শরীরে
শরীর লোভী স্বামী তাকে ছেড়ে গঞ্জে গেল কাজে
দিন যায় সপ্তাহ যায় স্বামী আর ফিরে না।
খবর পাই স্বামী আরেক বিয়ে করে সংসার করছে।
হুরমতি প্রতিহিংসায় দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে
মরদ আমার বাবাই ভিটা বেইচা
তোর সাথে আমারে বিয়া দিয়াছে যৌতুক দিয়া।

দিন যায় হুরমতির সব স্বপ্ন ধুসর হয়
গঞ্জে ছুটে স্বামীর খোঁজে,
গাঁয়ের একজনের সাহায্যে স্বামীর খোঁজ পায়
বহু কষ্টে।
তাকে দেখেই স্বামীর চড়া হয়ে বলে
মাগী তুই এখান আইসোস কিসের লাইগা
মুরদ নাই আমারে খুশি করবার।

হুরমতি কইল চিৎকার করে শুধু দেহটের লাইগা বিয়া করছিলা
তোমার সন্তান তোমার কেউ না।

কাঁদতে কাঁদতে হুরমতি ছেলের হাত ধরে রাস্তায় বের হয়ে পড়ল, এত বড় শহরে সে কোথায় যাবে কি করবে কিছুই ভাবতে পারছে না (পাঠক যে যার মত করে হরমতির জীবনের পরিনতি ভেবে নেন) এই শহরে হাজার হুরমতির জীবনে এভাবেই নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা তারা নিরুপায় হয়ে বেচে নেয় অন্ধ ওলি গলি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button