ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে ধনুকারদের ব্যস্ততা

দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু। তবে সেই প্রশান্তির ঘুমের সাথে শীতকে মোকাবেলা করে ঘুমাতে প্রয়োজন শীতবস্ত্রের। সেই শীত বস্ত্রের সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় থাকে লেপ। আর তাই শীতের এই আগমনী বার্তায় ব্যস্ততা বেড়েছে ঝিনাইদহের লেপ-তোষক তৈরি কারিগরদের।

এখন অলস সময় কাটানোর একদম ফুসরত নেই তাদের। শীত মৌসুম এলেই অন্তত ৪টি মাস তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। তাই তারা অন্য সময়ের রোজগার পুশিয়ে নিতে এ ৪টি মাস কাজ করেন সমান তালে। বাকি ৮ মাস এ কাজের চাহিদা না থাকায় লেপ সেলাই কর্মীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য অন্য কাজে মনোনিবেশ করে। কেউ নেমে পড়ে রিকশা-ভ্যান চালাতে, কেউ মাঠে দিন মুজুরের কাজ নেয়, আবার কেউ কেউ তাদের সুবিধামতো বেছে নেয় অন্য পেশা।

ঝিনাইদহ শহরের লেপ ও তোষক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম জানান, বছরের অন্যান্য সময় মাসে ২/৪ জন তোষক কিনতে আসলেও লেপের চাহিদা একে বারেই থাকে না। শীতের শুরু থেকে অন্তত ৪টি মাস লেপ ও তোষক বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। সব থেকে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে লেপ। যে কারণে চাহিদার কথা মাথায় রেখে লেপ সেলাই কর্মীদের সংখ্যাও বাড়াতে হয় কয়েক গুণ।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমার এখানে ২০ জনের উপরে লেপ সেলাইয়ের কর্মী রয়েছে। অন্য সময় এ ব্যবসা ধরে রাখতে মাত্র ২/৩ জন লেপ ও তোষক সেলাইয়ের কাজ করে থাকে। শীত মৌসুম শেষ হলেই এখানে কাজ না থাকায় বাকি লেপ সেলাই কর্মীরা অন্য পেশায় চলে যায়। এখানে পাইকারী দামে হকারদের কাছে রেডিমেট লেপ ও তোষক বিক্রি করা হয়। হকাররা ইঞ্জিন চালিত আলমসাধুতে লেপ-তোষক সাজিয়ে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সাড়ে ৬ থেকে ৭ শ টাকা দরে প্রতিটি লেপ ও ৯ শ থেকে হাজার টাকায় তোষক বিক্রি করে। পাশাপাশি এখানে ভালো লেপ তৈরির অর্ডারও নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে লেপ অনুযায়ী দাম ১ হাজার থেকে ১৩ শ টাকা পড়ে।

সেলাইকর্মী হাবিব জানান, প্রতিদিন তিনি পাঁচ থেকে ছয়টি লেপ সেলাই করে থাকেন। লেপ অনুযায়ী প্রতিটি লেপে তিনি মুজুরী পান ৮০ থেকে ১ শ টাকা। সেলাইকর্মীরা সবাই একই নিয়মে মজুরি পেয়ে থাকেন বলেও জানালেন তিনি।

অপর সেলাইকর্মী জাকির হোসেন বলেন, সেলাই কাজ করলে অন্তত ৪টি মাস কোথাও কাজের জন্য ধর্না  দিতে হয় না। ছায়ায় বসে সেলাইয়ের কাজ করতে বেশ ভালোই লাগে। দিন শেষে চার থেকে পাঁচশ টাকা রোজগার হয়। শীত মৌসুম শেষে অন্য কাজে গেলে প্রতিদিন গড় রোজগার ২ শ টাকা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। যে কারণে এ মৌসুমে রোজগার অনেকটা পুশিয়ে নিতে আমরা ৪ মাস লেপ সেলাইয়ের কাজ করে থাকি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button