ঝিনাইদহে দিনের পর দিন বিলুপ্ত হচ্ছে কাঠবিড়ালী
‘কাঠ বিড়ালী কাঠ বিড়ালী পেয়ারা তুমি খাও?’ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা খুকি কাঠবিড়ালী কবিতা পড়েননি এমন কাউকে পাওয়া ভার। খুব পরিচিত অনিন্দ্য সুন্দর দুরন্ত এই প্রাণিটা এখন আর আগের মতো দেখা যায়না।
এক সময় এই জনপদে গাছপালায় এমনকি লোকালয়ে কাঠবিড়ালীর অবাধ বিচরণ থাকলেও এখন তেমন চোখে পড়েনা। অসাধু চোরা শিকারীদের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে নয়নাভিরাম ছোট্ট প্রাণী কাঠবিড়ালীর ওপর। ডোরাকাটা এই কাঠবিড়ালী শিকারীরা ধরে পাচার করছে। এছাড়া জলবায়ূ পরিবর্তন, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ সর্বোপরি আবাসভূমি বিনষ্টের কারণে দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে কাঠবিড়ালী।
কাঠবিড়ালী স্তন্যপায়ী প্রাণী। শরীরটা লম্বাটে। প্রায় শরীরের সমান দীর্ঘ লেজ। পুরো লেজ ঘন পশমে ঢাকা। বড় বড় চোখ। প্রখর দৃষ্টি, সামনের দুই পা ছোট। পায়ের আঙুলে ধারালো নখ রয়েছে। এই নখ দিয়ে এরা তরতরিয়ে লম্বা যে কোনো গাছে উঠতে পারে। পেছনের লম্বা পা কাজে লাগায় দ্রুতগতিতে লাফ দিতে। লম্বা গাছে ওঠার সময় বুদ্ধি করে লেজ গুটিয়ে রাখে। দেশে এর আটটি প্রজাতি দেখা যায়। এরমধ্যে পাঁচডোরা কাঠবিড়ালী দেখতে সবচেয়ে সুন্দর।
বাদামি, কালো, উড়ক্কু কাঠবিড়ালী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকলেও পদ্মার দক্ষিন পাশের বৃহত্তর ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, খুলনা, মাগুরা ও যশোর জেলায় পাঁচডোরা কাঠবিড়ালীর দেখা মেলে।
আকারে ছোট, লেজসহ মোট দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি। বাদামি রঙের ওপর কালো ডোরার এই কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাবার ফল, খেজুরের রস, বীজ। এরা একসঙ্গে একাধিক বাচ্চা দেয়। নিরীহ প্রাণিিটর চলাফেরা বা খাবার সংগ্রহের দৃশ্য যে কোন মানুষকে মুগ্ধ করবে। সুন্দর এই প্রাণীটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।