ঝিনাইদহ সদর

ঝিনাইদহের ফুল যাচ্ছে সারা দেশে

এক সময় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার যে সকল মাঠে দেখা যেতে ধান, পাট আর আখের ক্ষেত। এখন সেখানে শুধু চোখে পড়ে বিভিন্ন ধরনের ফুলের ক্ষেত। যা দেখলে নয়ন-মন জুড়িয়ে যায়। মনে হয় যেন কোন এক ফুলের রাজ্যে এসে পড়েছি।
ফুল ভালোবাসার প্রতীক। সৃষ্টির শুরু থেকেই ফুলের প্রতি রয়েছে মানুষের গভীর আকর্ষণ।


ফুলের প্রতি মানুষের আদিকাল থেকে আকর্ষণ থাকলেও বাংলাদেশে তেমন একটা পরিলক্ষিত হত না। শুধু মাত্র সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে পূজা, পার্বণ এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে কোন কোন ফুলের চাহিদা দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে তার আমূল পরিবর্তন দেখা যায়। তাই ফুল শুধু কারও ব্যাক্তিগত বাগানে শোভা বর্ধনের জন্য চাষ হয় না। চাষ হয় চাষিদের প্রচেষ্টায় মাঠে। যা তাদের উপার্যনের অন্যতম উৎস হিসেবে ।
সারা বছর দেশে ফুলের চাহিদা থাকলেও বিশেষ করে বাংলা নববর্ষ, বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালবাসা দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারি ও স্বাধীনতা দিবসে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুন। এই চাহিদার সিংহভাগ যোগান দিয়ে থাকেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলচাষিরা। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কালীগঞ্জে ফুল চাষ।


সরোজমিনে দেখা গেছে প্রতি বছর ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলায় বেশকিছু গ্রামে শত শত একর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ হয়। দিনদিন ফুল চাষের বিস্তার বেড়েই চলেছে। এখানে চাষ হয় গাঁদা, রজনীগন্ধ্যা, গোলাপ ও গ্লাডিওলাসসহ নানা জাতের ফুল। এলাকার উৎপাদিত ফুল প্রতিদিন চলে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোয় ।ফুলের চাষে 
উৎপাদন ব্যয় কম, আবার লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন অন্য ফসল ছেড়ে ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।


কালীগঞ্জ উপজেলার কামালহাট, খড়িকাডাঙ্গা, দৌলতপুর, কাদিরডাঙ্গা, বিনোদপুর, খালকোলা, বালিয়াডাঙ্গা, দাদপুর, ধলা, গোপিনাথপুর, ডুমুরতলা,বালিয়াডাঙ্গা, তিল্লা, সিমলা, রোকনপুর, গোবরডাঙ্গা, পাতবিলা, পাইকপাড়া, তেলকূপ, গুটিয়ানী, সদর উপজেলার গান্নাসহ বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ফুল চাষ হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাঁদা ফুল চাষ হয় কালীগঞ্জ উপজেলার কামালহাট গ্রামে।


প্রতিবছর ঝিনাইদহ জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকার ফুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়। সব বয়সের মানুষের হাতে ফুল তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করে চলেছেন ঝিনাইদহের ফুল চাষিরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button