ধর্ম ও জীবন

নামাজে ভয় প্রসঙ্গে বিশ্বনবি যা বললেন

কুফর থেকে মানুষকে মুসলিম পরিচয় প্রদান করে নামাজ। তাই যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয় তার কোনো দ্বীন নেই। শুধু তাই নয়, যার নামাজ নেই তার ঈমানও নেই। এ সবই হাদিসের পরিভাষা।

আবার যারা নামাজ পড়ে কিন্তু নামাজে ভয় থাকে না, তারা কি মুক্তি পাবে নাকি শাস্তি পাবে? ভয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় প্রসঙ্গে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কী? ভয় ছাড়া নামাজ আদায়েই বা প্রতিশ্রুতি কী? এ প্রসঙ্গে হাদিসে বিশ্বনবি বর্ণনা করেন-

হজরত উবাদাহ ইবনে সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওজু করে সঠিক সময়ে নামাজ পড়বে, নামাজে রুকু ও খুশুকে পরিপূর্ণ করবে , তার জন্য আল্লাহর অঙ্গীকার হলো- আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করবেন। আর যে এরূপ করবে না, তার (নামাজের) জন্য আল্লাহর কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে ক্ষমা করবে অথবা শাস্তি দেবেন।’ (আবু দাউদ)

মানুষ সাধারণত নামাজে রুকু, সেজদা ইত্যাদি রোকনগুলো আদায় করে কিন্তু নামাজে আল্লাহর ভয় একান্ত মনের ব্যাপার। এখানে তা প্রকাশ করার কিছুই নেই। সুতরাং যাদের নামাজে আল্লাহর ভয় নেই, তাদের নামাজের ব্যাপারে আল্লাহর কোনো প্রতিশ্রুতিও নেই।

হাদিসের আলোকে বুঝা গেল, যারা ভয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। অন্য হাদিসে ভয়ের সঙ্গে নামাজ আদায় প্রসঙ্গে এসেছে-

> ‘যে মুসলিম বান্দা ফরজ নামাজে উপস্থিত হয় অতঃপর ভালোভাবে ওজু করে এবং নামাজের খুশু ও রুকু (ইত্যাদি সুন্দরভাবে) আদায় করে। ওই নামাজ তার আগের সব গোনাহের কাফফারা হবে। যতক্ষণ না সে কবিরা গোনাহে লিপ্ত না হয়।’ (মুসনাদে আহমদ)

> ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওজু করে দাঁড়িয়ে জিকির ও খুশুর সঙ্গে ২ রাকাআত নামাজ আদায় করলো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

শুধু তাই নয়, যারা আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক নামাজের হক আদায় করে নামাজ আদায় করে তাদের ব্যাপারে প্রিয়নবি ঘোষণা করেন-
> ‘যে ব্যক্তি নামাজের রুকু-সাজদা ও ওয়াক্তের প্রতি লক্ষ্য রেখে ৫ ওয়াক্ত নামাজের হেফাজত করে এবং (৫ ওয়াক্ত) নামাজকে আল্লাহর পক্ষ থেকে হক্ব তথা অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে জানে; সে জান্নাতে প্রবেশ করবে কিংবা তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে অথবা সে জাহান্নামের জন্য হারাম হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ)

> ‘যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ওজু করে এবং নামাজ আদায় করে তবে তার আগের (মন্দ) আমল ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ইবনে হিব্বান)

সুতরাং নামাজের হকসমূহ যথাযথভাবে পালন করা জরুরি। বিশেষ করে নামাজের সময় অন্তরে আল্লাহর ভয় পোষণ করা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে ওজু, রুকু, সেজদা ও খুশুর সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button