অন্যান্য

জেনে নিন সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণগুলো

আমাদের দেশে শারীরিক অসুস্থতাকে যতটা গুরুত্ব দেয়া হয়, মানসিক অসুস্থতার দিকটি থাকে ততটাই অবহেলিত। তাই সিজোফ্রেনিয়ার মতো ভয়ানক মানসিক রোগকেও গুরুত্ব দেয়া হয় না। বর্তমানে বিশ্বে শুধুমাত্র সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি।

সাধারণ মানুষের গড় আয়ুর তুলনায় সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর আয়ু প্রায় ১৫-২০ বছর কমে যায়। ২০-৪৫ বছর বয়সী যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই প্রাথমিক লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মনরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সিজোফ্রেনিয়া রোগের প্রধান লক্ষণগুলো মূলত ৩ ভাবে প্রকাশ পায়-

চিন্তার মধ্যে অসংলগ্নতা:

১. মনে অযথা সন্দেহ: কোনো কারণে সন্দেহ হতেই পারে। কিন্তু এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষকেও সন্দেহ করতে থাকেন। তারা ভাবতে থাকেন সবাই তাকে নিয়ে মজা করছে, সমালোচনা করছে কিংবা বিশেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।

২. ভুল জিনিসে দৃঢ় বিশ্বাস: সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি অহেতুক এবং অবাস্তব জিনিসকে সত্য ভাবতে থাকেন। যেমন, সবাই তার ক্ষতি করছে, খাবারে বিষ মেশানো রয়েছে, তিনি না বললেও কেউ তার মনের গোপন কথা জেনে যাচ্ছে ইত্যাদি।

আচরণগত সমস্যা:

১. হঠাৎ করেই জোরে হেসে ওঠা, আবার কোনো কারণ ছাড়াই কেঁদে ফেলা।

২. হঠাৎ করেই খুব বেশি রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হয়ে ওঠা।

৩. মানুষের সঙ্গে একেবারেই মিশতে না চাওয়া।

৪. কোনো কারণ ছাড়াই আত্মহত্যার চেষ্টা করা।

৫. কোনো কারণ ছাড়াই এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকা।

৬. আগে একেবারেই যা করতেন না, সে ধরনের আচরণ করতে থাকা।

৭. জনসমোক্ষে গায়ের কাপড় খুলে ফেলার চেষ্টা করা।

অনুভূতি বিষয়ক সমস্যা:

১. কেউ তার সঙ্গে কথা না বললেও, মনে হতে পারে কেউ যেন তার সঙ্গেই কথা-বার্তা বলছে। সিজফ্রেনিয়ার রোগীরা এভাবেই পশুপাখির ডাকও শুনতে পান।

২. গায়ে পোকামাকড়ের হাঁটার অনুভূতি হয়।

৩. বিশেষ কোনোকিছুর গন্ধ পেতে থাকা, যদিও সেই গন্ধ অন্যেরা কেউই পাচ্ছেন না।

লক্ষণগুলো যদি কারও মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় দেখতে পাওয়া যায় তাহলে তিনি সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং আপনজনের সান্নিধ্যে রোগী অনেক ক্ষেত্রেই সুস্থ হয়ে যান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button