ধর্ম ও জীবন

মুনাজাতের শেষে কালেমা তাইয়্যেবা পড়া কি আবশ্যক?

মুনাজাতের শেষে কালেমা তাইয়্যেবা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ দ্বারা মুনাজাত শেষ করায় ইসলামের বিধান কী? এ সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্যই বা কী?

উপমহাদেশের অধিকাংশ দোয়া-মুনাজাতে কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ দ্বারা মুনাজাত শেষ করা হয়। রাহে বেলায়াত গ্রন্থ এসেছে, ‘কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ দ্বারা মুনাজাত শেষ করায় হাদিস কিংবা সাহাবাদের শিক্ষা বা কর্মের মধ্যে পাওয়া যায়নি।

কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ মুসলমানদের ঈমানের ভিত্তি। আল্লাহর জিকির-আজকারের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির। মুনাজাত শেষ করতে কিংবা অন্য কোনো সময় এ কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ পাঠ করা অবৈধ নয়।

তবে এটাকে সুন্নাত মনে করে কিংবা রীতি হিসেবে স্থায়ী করে নেয়া সুন্নাত পরিপন্থী। সুন্নাতের পরিপন্থী কোনো কিছুকে ইবাদত হিসেবে গ্রহণ উচিত নয়।

নিয়মিত কোনো কাজে কোনো বিষয়ের ব্যবহার সুন্নাত পরিত্যাগ বা সুন্নাতের অবহেলা করার মতো অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে। তাই যে জিকির যেখানে যেভাবে করার জন্য হাদিসে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সেভাবে তা আদায় করাই উত্তম এবং অধিক সাওয়াবের কাজ।

সাহাবায়ে কেরাম আজীবন অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণে দোয়া মুনাজাত করেছেন। তারা নিয়মিত তো দূরের কথা কখনো কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ দ্বারা মুনাজাত শেষ করেছেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুন্নাতের বাইরে কোনো রীতি বা কাজে সাহাবায়ে কেরামসহ কোনো বুজুর্গানে দ্বীনের আগ্রহ ছিল না। তাঁদের একমাত্র আদর্শ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যেহেতু হাদিসে কিংবা সাহাবাদের জীবনে কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ এর ব্যবহার ছিল না তাই কালেমাকে রীতি হিসেবে নিয়ে মুনাজাত শেষ করায় বিশেষ ফজিলত আছে মনে করাও ঠিক নয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দোয়া-মুনাজাত, জিকির-আজকারসহ যাবতীয় আমল সুন্নাত অনুযায়ী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button