মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ১১ দিনেই ৫টি মামলা
সূত্র- প্রথম অালো—
আগেই মামলা ছিল ১৫টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে দায়ের হয়েছে আরও ৫টি। এর মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরই ৩টি। ৩টিই নাশকতার মামলা। বাদী পুলিশ। এ নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে অধ্যাপক মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মোট ২০টি মামলা হলো।
ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর) আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মতিয়ার রহমান। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ঝিনাইদহ জেলা শাখার সেক্রেটারি। এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে আরও তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন কণ্ঠশিল্পী মনির খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল ও বিএনপিদলীয় সাবেক সাংসদ শহিদুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান রনি।
মতিয়ার রহমানের দাবি, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর নামে পাঁচটি মামলা হয়েছে, যার সবই মিথ্যা মামলা। শুধু নির্বাচন থেকে তাঁকে দূরে রাখতেই এসব মামলা দেওয়া হয়েছে। তারপরও তিনি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
গত ২৮ নভেম্বর, ২ ডিসেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর মহেশপুর থানায় নাশকতার মামলা তিনটি হয়েছে। বাদী তিন পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁদের দাবি, নাশকতার চেষ্টার সময় আটক আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মতিয়ার রহমান আসামি হয়েছেন।
অধ্যাপক মতিয়ার রহমানের অভিযোগ, তাঁর প্রার্থিতায় অনেকে ভীত। তাঁরা নির্বাচনী যুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে হামলা-মামলা করে হয়রানি করছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দেশে যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই সময় থেকে নানাভাবে তাঁর নামে মামলা দায়ের অব্যাহত রয়েছে। সেই থেকে তাঁর নামে ২০টি মামলা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মাঠে নামা ঠেকাতে তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে, যার সবই মিথ্যা। এর মধ্যে ২৬ নভেম্বর হয়েছে দুটি মামলা। আর ২৮ নভেম্বর তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন, সেদিন রাতেই হয়েছে আরেকটি মামলা। এরপর ২ ও ৬ ডিসেম্বর আরও দুটি মামলা করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ২৮ নভেম্বর রাতে যে মামলাটি দায়ের হয়েছে, ওই মামলায় উপজেলার বেলেমাঠ বাজার থেকে নাশকতার চেষ্টার সময় দুজনকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন মহেশপুরের মান্দারবাড়িয়া গ্রামের শফি উদ্দীনের ছেলে জামিল হাসান (২২) ও কোটচাঁদপুরের রমিজ উদ্দীনের ছেলে মুরাদ কবির (২৬)। তাঁদের কাছে ৯টি হাতবোমাও পাওয়া যায়। তাঁদের দেওয়া তথ্যে মতিয়ার রহমান আসামি হয়েছেন। মামলায় মতিয়ার রহমান, আটক দুই তরুণসহ আরও ১৩ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে সাতজনকে। মামলার বাদী মহেশপুর থানার এসআই কাঞ্চন।
অবশ্য মামলাটির গ্রেপ্তারকৃত আসামি জামিল হাসানের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁর ভাই ঘটনার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মান্দারবাড়িয়া বাজারে তাঁরই দোকানে বসা ছিলেন। এরপর তিনি পারিবারিক কাজে তাঁকে বাড়িতে পাঠান। বাড়ির গেটের সামনে থেকে মহেশপুর থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ২ ডিসেম্বর রাতে মহেশপুরের আলামপুর এলাকায় চারজন আটক হন। তাঁরা পুলিশের ওপর হামলার জন্য গাড়াবাড়িয়া স্কুল মাঠে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ তাঁদের আটকের পর জানতে পারে, মতিয়ার রহমান ও আবদুল হাই তাঁদের নিয়ে আগে একটি সভা করেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভোট সামনে রেখে পুলিশের ওপর আক্রমণের মাধ্যমে জানান দিতে হবে তাঁদের অবস্থান। এ ঘটনায় থানার এসআই মো. শামীম মিয়া বাদী হয়ে মতিয়ার রহমানসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও আট–নয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
সর্বশেষ ৬ ডিসেম্বরের মামলাটি করেছেন এসআই মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশপুর থানায় ওসি (তদন্ত) মো. আমানুল্লাহ দাবি করেন, মতিয়ার রহমানের নামে সম্প্রতি যে তিনটি মামলা হয়েছে, তিনটিই নাশকতার মামলা। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানকালে আটক ব্যক্তিরা মতিয়ার রহমানের যুক্ত থাকার কথা বলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।