ধর্ম ও জীবন

যে কারণে ইমাম বুখারি রহ. মাতৃভূমি ছেড়ে সমরকন্দে গিয়েছিলেন

আব্দুল্লাহ বিন শাহেদ আল-মাদানী 

ইমাম বুখারির শেষ জীবন খুব সুখ-শান্তিতে অতিবাহিত হয় নি। বুখারার তৎকালীন আরিরের সাথে তাঁর মতবিরোধ হয়েছিল। তখন থেকেই তার সামনে নানারকম প্রতিকূলতা সামনে আছে।

যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হিসেবে যখন ইমাম বুখারির সুনাম ও সুখ্যাতি চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল তখন বুখারার আমির নিজের সন্তানদের বুখারি শরিফ পড়ানোর জন্য ইমামের কাছে প্রস্তাব করলেন।

আমির আরও প্রস্তাব করলেন, তার সন্তানদের পড়ানোর জন্য ইমাম বুখারিকে রাজ দরবারে আসতে হবে। কারণ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো মসজিদে বসে আমিরের ছেলেদের পক্ষে পড়া সম্ভব নয়।

প্রস্তাব শুনে ইমাম বুখারি অবাক হলেন এবং খুব দ্রুতই এমন অদ্ভুত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। তিনি জানিয়ে দিলেন, মসজিদ ও সাধারণ লোকদের ছেড়ে রাজ দরবারে গিয়ে আলাদাভাবে আরিরের ছেলেদের বুখারি পড়ানো ইলমে হাদিসের জন্য অবমাননাকর।

তিনি পরিস্কার জানিয়ে দিলেন, আমি কখনও হাদিসের ইলমকে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারবো না এবং এ মহান রত্মকে আমির-উমারাদের দারস্থ করতে পারবো না।

আমির যদি সত্যিকার অর্থে ইলমে হাদিসের প্রতি অনুরাগী হন, তাহলে তিনি যেন তার সন্তানদের আমার বাড়িতে ও মসজিদে পাঠান।

কথা শুনে আমির ইমামের প্রতি রাগান্বিত হয়ে তাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করলেন এবং ইমামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার জন্য দুনিয়া পূজারি কিছু আলেম ঠিক করলেন।

আমিরের আদেশ এবং ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষিতে তিনি জন্মভূমি বুখারা ত্যাগ করে নিশাপুরে চলে যান। নিশাপুরেও অনুরূপ দুঃখজনক ঘটনা ঘটলে পরিশেষে সমরকন্দের খরতঙ্গ নামক স্থানে চলে যান।

বুখারা থেকে বের হওয়ার সময় ইমাম বুখারি আল্লাহর কাছে দুআ করেন, হে আল্লাহ! বাদশা আমাকে যেভাবে অপমান করে বের করে দিয়েছে তুমিও তাকে অনুরূপ লাঞ্চিত করো।

এর এক মাস পার হওয়ার পূর্বেই খুরাসানের আমির খালেদ বিন আহমাদের বিরুদ্ধে জনগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করে তাকে ক্ষমতা ছাড়া করে। পরবর্তীতে বাগদাদের জেলে থাকা অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।

শুধু তাই নয় যারা ইমাম বুখারির বিরুদ্ধে তার সহযোগিতা করেছেন তারাও পরবর্তীতে লাঞ্চিত হয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button