ধর্ম ও জীবন

নবীজির ক্ষমা ও দয়া

ঝিনাইদহের চোখঃ তায়েফের রক্তে ভেজা মরুপথ। নবুয়্যতের দশম বছর। শাওয়াল মাসে নবী (সা.) খাদেম যায়েদ বিন হারেস (রা.) কে সঙ্গে নিয়ে তায়েফ যান।

রাসূল (সা.) তায়েফবাসীর পাশে দশ দিন যাপন করেন। এ সময় তিনি তাদের নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে দ্বীনের দাওয়াত পেশ করেন। কিন্তু তারা বলল, তুমি আমাদের শহর থেকে বেরিয়ে যাও।

এরপর ইতর ছেলেপেলেকে তাঁর পেছনে লেলিয়ে দিল। অশ্লীল গালমন্দ আর চ্যাঁচামেচি করল। এক সময় তারা রাসূল (সা.)-এর ওপর পাথর মারতে শুরু করল। নবীজির জুতা দুটি রক্তে লাল হয়ে উঠল।

যায়েদ বিন হারেস (রা.) তাঁকে পাথর বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে তাঁর মাথায়ও যখমের সৃষ্টি হল। এভাবে পাথর মারার ভেতরে দৌড়াতে দৌড়াতে তারা রবীআর দুই ছেলে উতবা ও শাইবার আঙুর বাগানে আশ্রয় নিলেন।

এরপর রাসূল (সা.) মক্কার পথ ধরলেন। তাঁর হৃদয়ে তখন হতাশার কালো মেঘ। তিনি যখন করনুল মানাযিল নামক মহল্লায় পৌঁছলেন তখন জিবরাঈল (আ.) পাহাড়ের ফেরেশতাকে নিয়ে তাঁর কাছে এলেন।

বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! অনুমতি দিন! তাদেরকে আবু কুবাইস ও কুআইকিয়ান পাহাড়ের মাঝে ফেলে এক চাপ দিয়ে শেষ করে দিই। রাসূলে কারিম (সা.) শান্ত কণ্ঠে জবাব দিলেন, না! তাদেরকে মারবেন না। আমার একান্ত আশা; হয়তো আল্লাহ পাক তাদের বংশধরদের মধ্যে এমন অগণিত অসংখ্য মানুষ পাঠাবেন যারা একমাত্র আল্লাহতায়ালারই ইবাদত করবে। যারা তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুর শরিক করবে না। (আর রাহিকুল মাখতুম, আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহ.), বুখারি শরিফ।)

আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি একবার রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন ওহুদ যুদ্ধের চেয়েও কোনো কঠিন দিন কি আপনার জীবনে এসেছিল? জবাবে নবীজি তায়েফের এই মর্মান্তিক দিনের বর্ণনা দিয়েছেন।

অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন নবীজি আমাদের! তাঁর আখলাক-চরিত্র ছিল মহান! আমরা কী হতে পারি না নবীজির মতো দয়ালু হৃদয়ের মানুষ!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button