ধর্ম ও জীবন

সুদী ঋণে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করা কি জায়েয?

ঝিনাইদহের চোখঃ

প্রশ্ন : এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করা যায়েয হবে কি – যে প্রতিষ্ঠানের মূল পূঁজি সুদ ভিত্তিক ব্যাংক লোন? আমি যে বেতন পাবো তা কি হালাল হবে? আমি এ বিষয়ে দ্বিধান্বিত আছি, কারণ – প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তো তার ব্যবসার আয় থেকে ব্যাংকের ঋণ সুদ সহকারে পরিশোধ করবেন। এখানে কি উনার সুদী লেনদেনে সহায়তা হয়ে যাবে?

উত্তর : হ্যাঁ, জায়েয হবে। আসলে সুদের ভিত্তিতে ঋণ নিলে উক্ত ঋণের টাকা বা তদ্বারা খরিদকৃত যেকোনো পণ্য হারাম হয় না। কেননা মূল ঋণে তো কোনো সমস্যা নেই। নাজায়েয হল ঋণের সাথে সুদের চুক্তি করা এবং সুদের লেনদেন করা।

আর আপনার মনে যে প্রশ্ন তা তো প্রতিটি ক্ষেত্রেই আসার কথা। আচ্ছা বলুন তো, বর্তমানে কোনো কোম্পানি বা বড় ব্যবসায়ী কি ব্যাংক লোন ছাড়া ব্যবসা করে? যেমন ধরুণ, দেশের যে কোনো একটি বড় ওষুধ কোম্পানি। এদের যে পরিমাণে ব্যাংক লোন রয়েছে, তা কি ছোটখাটো কিছু?

এখন তাদের ঔষধ কেনার অর্থ যদি হয় তাদের ঋণ সুদসহ পরিশোধে সাহায্য করা অথবা সুদী লেনদেনে সহায়তা করা, তাহলে কি কোনো লেনদেন করা সম্ভব হবে? এখানে উদাহরণস্বরূপ একটি বিষয় কেবল উল্লেখ করা হল।

তাই শরীয়ত এক্ষেত্রে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছে যে, কোনো কাজ কোন অন্যায়ের সহযোগিতা বলে ধর্তব্য হবে আর কোনটা হবে না। আর ঐ মূলনীতির আলোকেই মুফতীয়ানে কেরাম মাসআলা দিয়ে থাকেন। নতুবা জীবনযাপনই দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। তবে সতর্কতার জন্য উত্তম তো হল সর্বাবস্থায় সুদের যে কোনো ধোঁয়া বা ছায়া থেকেও বেঁচে থাকা।

তথ্যসূত্র -রদ্দুল মুহতার ৫/২৭২; নাইলুল আউতার ৫/১৫৪; মুফতী শফী (রহ.) আহকামুল কুরআন ৩/৭৪; সূরা মায়েদা, আয়াত ২; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪৫৩; ফিকহী মাকালাত ৩/৩৯/ পরিবর্তন

উত্তর প্রদান করেছেন – মুফতি আবুল হুসাইন
প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস, আল-জামেয়াতুল ইসলামিয়া আশরাফুল উলূম মাদরাসা, নড়াইল

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button