নিরোধের স্বপ্ন——গুলজার হোসেন গরিব
ঝিনাইদহের চোখঃ
নিরোধের স্বপ্ন——গুলজার হোসেন গরিব
কবে হবে আমার স্বপ্ন পূরণ?
একথা বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিরোধ,
বাবা মা মরা ছাড়া এমন নিঃশ্বাস কেউ ফেলেনা।
আমি জিজ্ঞেস করলাম,কী এমম স্বপ্ন নিরোধ
যার জন্য তুমি এতটা বিচলিত এতটা শোকার্ত?
নিরোধ ভেজা কণ্ঠে বলল,আমার বড় ছেলেটা
আমাকে কোনোদিন প্রশ্ন করেনি যেমন;
আকাশে উড়া যায় কি না
আকাশে উড়তে কী লাগবে
আমরা কিভাবে আকাশে উড়বো
উড়ার জন্য কী রকম প্রস্তুতি নেবো
কোনোকিছু তৈরি করা লাগবে কি না
উড়ার বাহক কেমন হবে,
আমার বড় ছেলেটা আজো এমন প্রশ্ন করেনি।
মেজো ছেলের প্রতিও খুব আশা ছিলো,
ভেবেছিলাম মেজো ছেলেটাও
আমাকে প্রযুক্তির নানা বিষয়ে প্রশ্ন করবে,
সেও প্রশ্ন করেনি,আকাশযান কত দ্রুতগামী হবে,
কত অল্প সময়ের মধ্যে কত গ্রহ ঘুরবে,
আমাদের আবিষ্কৃত যন্ত্র অন্যদের চাইতে
সর্বাপেক্ষা উত্তম যন্ত্র হবে কি না,
আমাদের অন্য আবিষ্কার সমুদ্র নিচে উপরে
বিশ্বসেরা ভুমিকা পালন করবে কি না,
না বলে নি,মেজো ছেলেও বলেনি।
নিরোধের চোখের স্বচ্ছ জলে কান্নার ঢেউ
স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
আকুতি কণ্ঠে বলল,সব আশা এখন আমার
ছোট ছেলে নিয়ে,ছোট ছেলের মধ্যেই
আমার কাঙ্খিত স্বপ্নগুলো হাবুডুবু খাচ্ছে।
নিরোধের স্বপ্নে আমি রীতিমত অবাক।
নিরোধ বজ্রকণ্ঠে বলে উঠলো,
আমার ছোট ছেলেই পারবে স্বপ্ন পূরণ করতে,
নিজের নামে গ্রহ আবিষ্কার করতে।
আমার ছোট ছেলেই পারবে আমাদের প্রযুক্তিতে
সারাবিশ্ব মুখরিত করতে।
আমার ছোট ছেলেকে দিয়েই আমাদের দেশ
উন্নতির সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌছাবে।
ছোট ছেলেটা খুব ছোট
আমার স্বপ্নটা ঝরে পড়বে এমন পাতার মতন।
নিরোধের স্বপ্নদেখা চোখ থেকে
জল গড়িয়ে বুক ভিজে যায়,
চোখ ভিজে গেলো আমারো।
হাসিও পেলাম,এ কি অদ্ভুত! স্বপ্ন নিরোধের।