কেমন আছেন ঝিনাইদহের কৌতুক অভিনেতা কাজল?
ঝিনাইদহের চোখঃ
৯০ দশকের পর কৌতুক অভিনেতা হিসেবে আর্বিভাব হয় কাজলের। এরপর তিনি লাখও মানুষকে তার রসবোধ দিয়ে মাতিয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। কিন্তু এটাই পেশা হিসেবে বেছে নেবেন, প্রতিভা তা তিনি কখনই ভাবেননি। কাজল বলেন, এই কৌতুক দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবো ভাবিনি। ছোটবেলায় টুকটাক গান শিখতাম। তবে নজরুল সংগীতে আমার ঝোঁক ছিল বেশী। কলেজে উঠে যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতাম।
শিক্ষকরা বলতেন, আমি ঢাকা গেলে বড় অভিনেতা হতে পারবো! আমার প্রথম কৌতুকের ক্যাসেট ‘হ্যায় আবুল’। পরবর্তীতে একের পর এক তার কৌতুকের ক্যাসেট বের হতে থাকে। মোট ক্যাসেট সংখ্যা ২৮টি।
কাজল বলেন, এখন সিডি ক্যাসেটের যুগ নেই। এসে গেছে ইউটিউব। সেখানে নিয়মিত কাজ করছি। তবে ইউটিউবে বেশিরভাগ কমেডি ভিডিওর নামে নোংরামি শুরু হয়েছে। এগুলো বন্ধ করা উচিত। ইউটিউব মিডিয়া দেখাশোনার জন্য সরকারী ভাবে তদারকি করা প্রয়োজন।
কথা প্রসঙ্গে কাজল বলেন, মানুষ হাসাতে সারা বছর শো করি। এবার নির্বাচনের কারণে কাজের চাপ তুলনামূলক কম ছিল। নির্বাচন শেষ, আবার শো শুরু করবো। আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। কুয়েত, কাতার, দুবাই, বাহরাইন, লন্ডন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ইতালি, মালয়েশিয়া ও সুইডেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কোরিয়া এসব দেশে একাধিকবার যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। এছাড়া দেশের এমন কোনো জেলা নেই যেখানে শো করিনি।
এর বাইরে অনেকগুলো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কাজল। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৫টির ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
কাজল জানান, তাকে প্রথম চলচ্চিত্রে সুযোগ দেন প্রয়াত চিত্র পরিচালক এহতেশামুর রহমান। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘চোখে চোখে’, ‘চাঁদনী রাতে’, ‘টাকার অহংকার’, ‘এক পলকে’, ‘লঙ্কা কাণ্ড’, ‘রক্তের অধিকার’, ‘হৃদয়ের বাসি’ ইত্যাদি।
কাজল বলেন, আমি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানেও পারফর্ম করেছি। ‘কথার কথা’, ‘রং বেরং’, ‘সাত সতেরো’, ‘শুভেচ্ছা’, ইত্যাদি এসব ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও দর্শক আমাকে চিনেছে। মানুষ আমাকে ভীষণ ভালোবাসে, সম্মান করে। এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন আমি যেন আজীবন আমার পেশায় মনোযোগী থেকে কাজ করে যেতে পারি।
১৯৬৭ সালে যশোর শহরের নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন কাজল। পৈত্রিক বাড়ী ঝিনাইদহ। বাবার নাম রাম গোপাল মৌলিক এবং মাতার নাম শ্রীমতী মিনতী রানী মৌলিক। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে কাজল সবার বড়। এখন কাজল দুই সন্তানের জনক। কাজলের এক ছেলে প্রাঞ্জল ও এক মেয়ে প্রিয়সী।
সবশেষে কাজল বলেন, সৃষ্টিকর্তা আমাকে খুব ভালো রেখেছেন। সবাই আমাকে একজন কৌতুকাভিনেতা হিসেবে চেনেন জানেন, এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।