সংরক্ষিত আসনে এমপি হচ্ছেন ঝিনাইদহের মনিকা আলম
ঝিনাইদহের চোখঃ
একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হচ্ছেন ঝিনাইদহের মনিকা আলম। তিনি ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসন থেকে মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন বঞ্চিত হন তিনি। তবে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বঞ্চিত করলেন না মনিকা আলমকেও। তাকে করা হয়েছে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য।
মনিকা আলম ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় পার্টির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
এদিকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনিকা আলমের মনোনয়ন প্রাপ্তির খবরে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করছেন ঝিনাইদহ জেলা পার্টির নেতাকর্মীরা।
আগামী ৩০ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। এবারের নির্বাচনে ২৫৭টি আসনে জয়ী হয়ে সংসদের সরকারি দল হিসেবে ভূমিকা পালন করবে আওয়ামী লীগ। ২২টি আসনে জয়ী হয়ে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকবে জাতীয় পার্টি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আটটি আসনে বিজয়ী হলেও এখনো তাদের কোনো এমপি শপথ নেননি।
সংসদে সরাসরি আসনের বিজয়ীদের পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনে নারী সদস্য (এমপি) নির্বাচনের বিধান রয়েছে। সংরক্ষিত আসন বিজয়ী দলের প্রার্থীর আনুপাতিক হারে দেওয়া হয়। এবার মহাজোটের বড় শরিক জাতীয় পার্টি এককভাবে ২২টি আসনে বিজয়ী হয়েছে বিধায় আনুপাতিকহারে তাদের তিন জন সংরক্ষিত নারী সদস্য থাকতে পারবেন সংসদে।
এই তিন আসনে নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চার জনের একটি তালিকা করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছেন। এ চার নারী হলেন পারভীন ওসমান (নারায়ণগঞ্জ), ডা. শাহীনা আক্তার (কুঁড়িগ্রাম), নাজমা আখতার (ফেনী) ও মনিকা আলম (ঝিনাইদহ)।
বুধবার দেওয়া এ চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির চার প্রার্থীকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদে কোনো জোট বা দল কয়টি সংরক্ষিত নারী আসন পাবে তা ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানাতে হবে। আইন অনুযায়ী, নবনির্বাচিতদের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর দল বা জোটগুলোকে এই সময়ের মধ্যে তথ্য জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এজন্য আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ইসিকে এ সংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে। আর ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১ এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে। জোট বা দলের আসন অনুপাতে এই সংরক্ষিত আসন বণ্টন করা হয়। কোনো জোট বা দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কে কত আসন পাবেন, তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন হবে আনুপাতিক। এ ক্ষেত্রে মোট সংরক্ষিত আসনকে জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে, সেই ভাগফলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার গুণফলই হবে ওই দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি (২২ আসন) বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দেওয়ায় সংসদে মহাজোটের এমপির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৬টি। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসনে জয়লাভ করায় তারা পাবে ৪২টি আসন। মহাজোট পাবে ৪৪টি সংরক্ষিত আসন। জাতীয় পার্টি পাবে তিনটি আসন।
ঐক্যফ্রন্টের আটজন নির্বাচিত এমপি অধিবেশন শুরুর পর নব্বই দিন পর্যন্ত শপথ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তারপরও শপথ না নিলে সে আসনগুলোতে পুনরায় নির্বাচন হবে। ঐক্যফ্রন্ট সংসদে গেলে তাদের জন্য দু’টি সংরক্ষিত নারী আসন থাকবে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনো জোটে যোগ না দিলে তাদের জন্য থাকবে একটি সংরক্ষিত আসন।