অন্যান্য

কেন মাথা জোড়া লাগা যমজ শিশুর জন্ম হয়?

ঝিনাইদহের চোখঃ সম্প্রতি সারা দেশে আলোচনা চলছে মাথা জোড়া লাগা যমজ শিশু রাবেয়া-রোকেয়াকে নিয়ে। ইতোমধ্যে তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার। চিকিৎসা চলছে হাঙ্গেরিতে।

তবে সব বাবা-মায়ের প্রত্যাশা- তাদের সন্তান সুস্থ হয়ে জন্ম নিক। একজন অন্তঃসত্ত্বা মাকে নিয়ে পরিবারের সবাই যেমন আনন্দে থাকে, তেমনি অনাগত সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগে অনেক চিন্তাও করেন তারা।

বেশ কয়েক বছর আগে ইরানে মাথা জোড়া লাগানো দুই শিশুর জন্ম হয়েছিল। তাদের আলাদা করার জন্য ২২ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার করা হলে তারা মারা যায়। আর বাংলাদেশে এই প্রথম রোকেয়া ও রাবেয়ার এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা হবে। তবে তাদের ধমনি ও শিরা মস্তিষ্ক আলাদা। তবে আনুষঙ্গিক কিছু সমস্যা রয়েছে।

তাদের অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রতিনিয়িত চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে তাদের এই চিকিৎসা প্রক্রিয়া অনেক জটিল ও সময়সাপেক্ষ।

অনেকের প্রশ্ন- কেন মাথা জোড়া লাগা যমজ শিশুর জন্ম হয়। অনেক কারণে মাথা জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম হয়ে থাকতে পারে।

কেন মাথা জোড়া লাগানো যমজ শিশুর জন্ম হয়?

প্রধানত দুটি কারণে মাথা জোড়া লাগা যমজ শিশুর জন্ম হয়।

১. জিনগত বা বংশগত কারণে।

২. ওষুধের কারণে।

জিনগত বা বংশগত কারণ-

যমজ শিশু জন্ম নেয়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে- বংশগত কারণ। পূর্ব-পুরুষদের কেউ যদি যমজ সন্তান জন্ম দেয়, তবে তা পরবর্তী প্রজন্মের যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ওষুধের কারণে-

অনেক দম্পতি রয়েছেন, যাদের সন্তান নিতে না চাইলেও হয়ে যায়। এ সময় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তারা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকেন। এতে ওই গর্ভবতীর সুস্থ বা অসুস্থ নবজাতকের জন্ম হতে পারে।

শুক্রাণু ও ডিম্বাণু

মায়ের দেহে সাধারণত একই সময়ে একটি মাত্র ডিম্বাণু দুটি ডিম্বাশয়ের যে কোনো একটি থেকে নির্গত হয়। যদি দুটি ডিম্বাশয় থেকেই একটি করে ডিম্বাণু একই সময়ে নির্গত হয়, তবে ওভ্যুলেশন পিরিয়ডে তার শরীরে মোট দুটি ডিম্বাণু থাকে। এ সময় মিলন হলে পুরুষের শুক্রাণু উভয় ডিম্বাণুকেই নিষিক্ত করে। একটি নিষিক্ত ডিম্বাণু প্রথমে দুটি পৃথক কোষে বিভক্ত হয়।

পরবর্তী সময় প্রতিটি কোষ থেকে একেকটি শিশুর জন্ম হয়। এখানে দুটি কোষ যেহেতু পূর্বে একটি কোষ ছিল, তাই এদের সব জিন একই হয়ে থাকে। এ কারণে এরা দেখতে অভিন্ন হয় এবং একই লিঙ্গের হয়। এভাবেই নন-আইডেন্টিক্যাল টুইন শিশুর জন্ম হয়। এসব শিশু সবসময় একই লিঙ্গের নাও হতে পারে এবং তারা দেখতে ভিন্নও হতে পারে।

লেখক: শিশু বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শিশু সার্জারি বিভাগ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button