ধর্ম ও জীবন

নামাজে মনোযোগ বাড়াবেন যেভাবে

ঝিনাইদহের চোখ ডেস্কঃ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে বান্দার সেতুবন্দের অন্যতম মাধ্যম হলো নামাজ। নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর সঙ্গে কথা বলে। আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতিটি কথার উত্তর দেন। অর্থাৎ মানুষ যখন নামাজে সুরা ফাতিহা তেলাওয়াত করেন; তখন আল্লাহ তাআলা বান্দার সে কথাগুলোর উত্তর দিয়ে থাকেন।

আর এ কারণেই নামাজকে আল্লাহর সঙ্গে সেতুবন্ধনের অন্যতম মাধ্যম বলা হয়ে থাকে। যখনই আল্লাহর সঙ্গে বান্দার বন্ধন তৈরি হয় তখনই মানুষ পরিপূর্ণ মুমিনের খ্যাতি লাভ করে।

মনোযোগের সাথে নামাজ আদায়ের কয়েকটি পরামর্শ সংক্ষেপে আলোচনা করা হল:

সচেতন থাকা: আপনি যখন নামাজের জন্য দাঁড়াবেন, তখন আপনি পূর্ণমাত্রায় সচেতন থেকে নামাজ আদায় করুন। নামাজের মধ্যে প্রতিটি পদক্ষেপে আপনি স্মরণ করুন যে কী কারণে, কোন উদ্দেশ্যে এক সর্বশক্তিমান সত্ত্বার সম্মুখে আপনি দাঁড়িয়েছেন।

নামাজের মধ্যে আপনার এমন ধ্যানের সহিত সচেতন থাকা প্রয়োজন, যেনো আপনি দেখছেন সেই মহান ক্ষমতাশালী স্বত্তাকে, যার সম্মুখে আপনি দাঁড়িয়েছেন, নতুবা অন্তত তিনি আপনাকে দেখছেন এবং আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করছেন।

অর্থ জেনে বুঝে পড়া: নামাজে যা কিছু পড়া হয়, তার অর্থসমূহ যদি শিখে নিয়ে জেনে বুঝে অর্থের প্রতি খেয়াল রেখে পড়া যায়, তাহলে নামাজে মনোযোগ বাড়ার সাথে সাথে আল্লাহর সাথে সম্পর্কও সুদৃঢ় ও সুনিবিড় হবে।

ধীরস্থিরভাবে আদায়: নামাজের সব কাজগুলো সময় নিয়ে ধীরে ধীরে স্থিরতার সাথে সম্পন্ন করলে তা নামাজের মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। সময় নিয়ে রুকু করা, সময় নিয়ে সিজদাহ করা, দুই সেজদাহর মাঝখানে সময় নিয়ে বসা- ইত্যাদি রোকনগুলো ধীরস্থিরভাবে সময় নিয়ে সম্পন্ন করলে নামাজের ভেতর মনকে স্থির রাখা সহজ হবে।

দোয়ায় বিভিন্নতা: নামাজের দোয়া সমূহের বিভিন্নতা নামাজে মনোযোগ ও আকর্ষণ বৃদ্ধির জন্য সহায়ক একটি উপায়। নামাজের যে সকল স্থানে আবশ্যকতা নেই যে এই দোয়াটিই পড়তে হবে বা এটিই নির্দিষ্ট, সে সকল স্থানে রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময়ে যে দোয়াসমূহ পাঠ করেছিলেন, সেগুলো শিখে নিয়ে যদি পরিবর্তন করে করে পাঠ করা যায়, তবে নামাজের মধ্যে মন সম্পূর্ণভাবে স্থির থাকবে এবং নামাজ একঘেয়েমিপূর্ণ রুটিন ওয়ার্ক না হয়ে বরং যথার্থই ইবাদতে পরিণত হবে। এবং এই নামাজ হবে আল্লাহর সাথে নিবিড়তম সম্পর্ক তৈরির মাধ্যম।

প্রতিটি আমলে সতর্কতা নামাজ শুরু করলে পরিপূর্ণভাবে সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরি। প্রতিটি আমল গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করা উচিত, কোনটি কী কারণে এবং কোন উদ্দেশ্যে মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহর সম্মুখে আপনি দাঁড়িয়েছেন। সম্ভব হলে নামাজের মধ্যে এমন পূর্ণাঙ্গ অনুভব ও ধ্যান রাখুন, আপনি যেনো মহাল আল্লাহকে দেখছেন, তার সামনে নতজানু হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ রূপ চিন্তা বা অনুভব করতে না পারলে অন্তত এতটুকু ভাবুন যে, তিনি আপনার প্রতিটি কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছেন। তার কাছে আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে। (ইবাদতে এমন ভাব আনার কথা হাদিসে উল্লেখ হয়েছে।)

মহান আল্লাহ আমাদের একাগ্রতা, মনোযোগ ও ঐকান্তিকতার সঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ দান করুন, আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button