
ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে যত্রতত্র নিয়ম নীতি ছাড়া গড়ে উঠেছে বেকারী কারখানা। উপজেলাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় দেড় ডজন বেকারী কারখানা । অধিকাংশ বেকারী গুলোতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেকারী খাবার তৈরী হচ্ছে। উৎপাদিত খাদ্যের মান প্রণয়ন এবং গুণগতমান ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণ কোনো ব্যবস্থা নেই। উৎপাদিত খাবারে দেশের মান নিয়ন্ত্রণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর অনুমোদন সহ নেই উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ।
সরোজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কিংবা বাড়িতে গড়ে উঠেছে প্রায় দেড় ডজন বেকারী কারখানা । কারখানা গুলো নিয়ম নীতি না মেনে স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরী করছে বেকারী খাবার। অভিযোগ রয়েছে বেকারী খাবার তৈরী করতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিক্যাল ও নিন্মমানের পাম তেল ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিকরা বিশেষ পোশাক ছাড়া খালি পায়ে খাবার তৈরী করছেন। নোংরা ও অপরিস্কার কড়াইগুলোতে আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। ডালডা দিয়ে তৈরী করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ন তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারী ফাস্টফুড খাবার উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। অধিকাংশ বেকারি মালিকের বিরুদ্ধে বিকল্প বেকারি মোড়কে নিন্মমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পণ্য বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকে ঝুঁলছে পাউরুটি, ক্রীমরোল, কেক, পেটিস, সিঙ্গাড়াসহ অন্যান্য বেকারী খাবার। মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ লেখা থাকলেও কত তারিখে উৎপাদন হয়েছে বা মেয়াদ কবে শেষ হবে তার কোনো উল্লেখ নেই।
মহেশপুর উপজেলার নাটিমা ইউপির বাবলা মাথাভাঙ্গার চাঁদনী ফুড প্রডাক্টস সহ কয়েকটি বেকারী সরোজমিনে এমন তথ্য উঠে আসে। এ সকল বেকারীতে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সহ জরিমানা আদায় করা হলেও , চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। কিছু দিন যেতে না যেতেই ফিরে যাচ্ছে পূর্বে অবস্থায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরী করা এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ঝুঁকি।
কয়েক জন বেকারী শ্রমিক জানান, দিনের বেলায় তারা কোনো পণ্য উৎপাদন করেন না। ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ হয়ে যায়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের ঝাঁমেলা কম বলেই পণ্য উৎপাদন রাতেই শেষ করা হয়। তারা আরও বলেন মাঝে মধ্যে স্যানিটারি অফিসার এসে ঘুরে চলে যায়।
মহেশপুর চা বাজারের, চা দোকানদার বলেন, আমরা গরীব মানুষ, চা-পান বিক্রি করে সংসার চালাই। উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নাই। ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞেস করে না।
চাঁদনী ফুড প্রডাক্টস বেকারীর মালিক খোরশেদ আলম বলেন,আমার বেকারীর মতো পরিস্কার পরিছন্ন উপজেলার অন্য কোন বেকারী নেই।
মহেশপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর,মোঃ মকলেচুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় বেকারীতে গুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, জরিমানা সহ সতর্ক করা হয়। তবে খাদ্যনীতিমালা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্বাশতী শীল জানান, আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।