জামানা কিংবা যুগকে গালি দেওয়া হারাম

ঝিনাইদহের চোখঃ
জামানাকে ভাল-মন্দ বলা বা গালি দেওয়া হারাম। এ ধরনের অভ্যাস বর্জন করা খুবই জরুরি। জামানাকে গালি দেওয়া তওহীদের পরিপন্থি। সাধারণত অজ্ঞ মূর্খ লোকদের মাঝে দেখা যায় যে, তারা জামানা বা যুগকে দোষারোপ করে গালি দেয়।
যখনই কোন সময় তাদের মন মতো কোনো কাজ হয় না তখনই তারা সে সময় বা জামানাকে কটূক্তি করে এবং সেই দিন অথবা মাস অথবা বৎসরকে অভিশাপ দিয়ে গালি দেয়। এ কথা সর্বজন বিধিত যে সময়, জামানা বা যুগের কিছু করার ক্ষমতা নেই বরং যা কিছু পরিবর্তন ঘটে তা স্বয়ং আল্লাহর নির্দেশে ঘটে। ফলে জামানাকে গালি দেওয়া প্রকারন্তরে আল্লাহকে কষ্ট দেওয়া।
জামানাকে গালি দেওয়ার কয়েকটি স্তর আছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ হলো জামানাকে অভিশাপ দেওয়া। তওহীদবাদীরা প্রতিটি বস্তুর সম্বোধন আল্লাহর দিকে করেন। আর কাফের মুশরিকগণ প্রতিটি বস্তুর সম্বোধন জামানার দিকে করে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “অবিশ্বাসীরা বলে, শুধু দুনিয়ার জীবনই আমাদের জীবন। আমরা এখানে মরি ও বাঁচি। জামানা ব্যতিত অন্যকিছুই আমাদেরকে ধ্বংস করতে পারে না।” (সূরা জাশিয়া- ২৪)
আবু হুরায়রা রাঃ বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, “আদম সন্তান আমাকে পীড়া দেয়, কারণ সে সময়, জামানা বা যুগকে গালি দেয়। অথচ আমি হচ্ছি সময়, জামানা বা যুগ। আমি সময়ের রাত-দিনকে পরিবর্তন করি।” (সহীহ বুখারী, হাঃ- ৪৭২৬, সহীহ মুসলিম, হাঃ- ২২৪৬)
অন্য বর্ণনায় আছে- তোমরা সময়, জামানা বা যুগকে গালি দিও না। কারণ আল্লাহই হচ্ছেন সময়, জামানা বা যুগ। (সহীহ মুসলিম, হাঃ- ২২৪৬)
এর অর্থ এই নয় যে, জামানা আল্লাহর নাম সমূহের একটি নাম। বরং এখানে বলার অর্থ হল, জামানা স্বয়ং না কোন জিনিসের মালিক নয়। কোনো কিছু করতে পারে না কোনো কিছু করতে পারবে। জামানার প্রকৃত সময় ও যুগ আল্লাহ ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তন করেন এবং এই দুটির নিজস্ব কোন কর্মক্ষমতা নেই। ফলে এই দুটিকে গালি দেওয়া প্রকারন্তরে এর পরিবর্তনকারী আল্লাহকে গালি দেওয়া যা অত্যন্ত গর্হিত ও কবীরা গুনাহের কাজ।
লেখক : মাওলানা আখতারুজ্জামান খালেদ, সাবেক ইমাম ও খতীব, দুপ্তারা কুমারপাড়া জামে মসজিদ, আড়াইহাজার নারায়ণগঞ্জ।