রামিম হাসান,ঝিনাইদহের চোখ: বিলুপ্ত প্রায় বিরল প্রজাতির একটি মদন টাক পাখি কে রসিতে বেঁধে বাড়িতে দিনের পর দিন আটকে রাখা হয়েছে । প্রতিদিন গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ এই বিরল পাখি টি দেখতে ভিড় করছে। তবে কয়েকদিন আটকে রাখায় প্রায় ৪ফুট উচ্চতার বিলুপ্তপ্রায় এই পাখিটির শরীর ক্রমেই ভেঙ্গে পড়ছে। পাখা ঝাপটিয়ে উড়তে পারছে না এমনকি হাটতে পারছে না । পায়ে দেখা গেছে আঘাতের চিহ্ন ।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক বিপুল মোল্লা তার বাড়িতে রসিতে বেঁধে রেখে দিয়েছে পাখিটি । কিন্তু গভীর অরণ্য বা সুন্দরবন-হাওর অঞ্চলের পাখিটির সুচিকিৎসা সহ দ্রুত লোকালয় থেকে উদ্ধার করে অবমুক্ত না করলে যে কোন সময় মারা যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে । গত ২৮ জানুয়ারী থেকে এভাবে পাখিটি রসিতে বন্দি রয়েছে ।
পা ও ঠোট অনেক লম্বা, পিঠের উপর ধুসর কালো রং, সাদা বর্ণের শরীরের প্রায় ৪ফুট উচ্চতার পাখিটি দেখতে অসংখ্য মানুষের ভিড় শৈলকুপা উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের বিপুল মোল্লার বাড়িতে । প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির এই মদনটাক পাখিটির জীবন এখন রসিতে বাঁধা । বাড়ির টিনের চালার উপর রসিতে বেঁধে রাখা হয়েছে । এভাবেই তাকে কখনো পুকুরের পাশে নেয়া হয় আবার বাড়ির আঙ্গিনায় রাখা হয় গ্রামবাসী সহ মানুষদের দেখার জন্যে । ৩দিন আগে বিকালে গ্রামটির গাছে এসে পাখিটি বসে এরপর সন্ধ্যার দিকে অতি উৎসাহী গ্রামটির কিছু মানুষ বাঁশের কোটা দিয়ে খোঁচা ও জালের ফাঁদে আটকে ধরে ফেলে ।
চিড়িয়াখানায় দেখা পাখি হাতের নাগালে পেয়ে দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও । দামুকদিয়া গ্রামের সুমন মোল্লা জানান, তারা আগে এমন পাখি দেখেননি।
এই বিলুপ্ত আর বিরল পাখিটি গ্রামের এগাছ ও গাছে বসে থাকলেও উড়তে পারছিল না বলে দাবি করছে পাখিটি পোষ মানানোর চেষ্টাকারী বিপুল মোল্লা । প্রাথমিক চিকিৎসা সহ প্রতিদিন মাছ খাইয়ে সুস্থ্য করে পাখিটি রেখে দিতে চান তিনি ।
পাখিটির মাথায় পালক থাকায় ধারণা করা হচ্ছে বিরল এই মদনটাক পাখিটি এখনো অপ্রাপ্ত বয়স্ক । প্রাপ্ত বয়ষ্কদের মাথায় পালক থাকে না। গভীর অরণ্য, সুন্দরবন আর হাওর অঞ্চলের এই পাখিটির সুচিকিৎসা সহ বনবিভাগ ও প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে দ্রুত লোকালয় থেকে উদ্ধার করে অবমুক্ত না করলে যে কোন সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আশংকা রয়েছে । তবে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার একটি টিম পাখিটি উদ্ধার করবে বলে জানা গেছে ।