অন্যান্য

কিডনিতে পাথর জমার কিছু উপসর্গ

ঝিনাইদহের চোখ ডেস্ক: কেমিক্যালযুক্ত খাবার, দূষণ আর কিছু বদঅভ্যাসের কারণে আজকাল কিডনি রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। ধীরে ধীরে রোগ বাড়তে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া সত্ত্বেও রোগ ধরা পড়তে দেরি হয়ে যায়। শেষমেশ যখন ধরা পড়ে, তখন চূড়ান্ত অবস্থা। কিছুই আর করার থাকে না। আবার কিডনি জটিল অবস্থায় না পৌঁছলে অনেক ক্ষেত্রেই আগাম লক্ষণ দেখা যায় না। নিচের দুই থেকে তিনটি লক্ষণ যদি একসঙ্গে মিলে যায়, চেপে না রেখে ডাক্তারের কাছে যান।

কিডনির অন্যতম রোগ রেনাল স্টোনে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি রেনাল স্টোনের অন্যতম কারণ।

নেফ্রোলজিস্ট অভিজিৎ তরফদারের মতে, ‘কিডনিতে পাথর কয়টি আছে এবং কোথায়, কেমন অবস্থায় রয়েছে তার উপরই রেনাল স্টোনের উপসর্গ নির্ভর করে। পাথর নানা আকারের হয়। সাধারণত পাথরের সংখ্যা কম ও আকার খুব ছোট হলে তা কোনো রকম উপসর্গ ছাড়াই শরীরে থেকে যেতে পারে। ওষুধের মাধ্যমে তা গলিয়ে দেওয়া বা শরীরের বাইরে বের করে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু সংখ্যায় বেশি বা আকারে বড় হলে তা কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে। তখন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।’

এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধলেও অনেকেই প্রথম অবস্থায় বুঝে উঠতে পারেন না। সাধারণত, কিডনির জটিলতার নানা উপসর্গই এই রোগের ক্ষেত্রেও লক্ষণ হিসাবে দেখা দেয়।

দেখে নিন উপসর্গগুলো:

► অনেকেরই এই অসুখের হাত ধরে ঘন ঘন জ্বর আসে। তাপমাত্রা অল্প থাকলেও বার বার ঘুরেফিরে এমন জ্বর এলে সাবধান হোন।

► মূত্রের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। যদি লালচে রঙের প্রস্রাব হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিডনির অন্যান্য জটিলতাতেও প্রস্রাবের রং লালচে হতে পারে।

► কোমর থেকে তলপেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ব্যথা যে সকলের ক্ষেত্রে স্থায়ী হবে এমন নয়। তাই মাঝে মাঝে এমন ব্যথা হলেও সতর্ক হোন।

► বমি হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। বমিভাবও থাকে অনেকের।

এসব লক্ষণ দেখলে রেনাল স্টোন ও কিডনির যে কোনো জটিলতা বোঝার জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, কিছু বিশেষ নিয় মেনে চললে রেনাল স্টোনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
তবে দেখে নিন সেই নিয়মগুলো:

খাদ্য ও পুষ্টি

আপনার খাদ্যতালিকায় তরল খাওয়া গ্রহণের পরিবর্তন করে কিডনি পাথর প্রতিরোধ করতে পারেন। এছাড়াও কিডনি পাথর প্রতিরোধ করতে কিছু খাবার কম পরিমানে খেতে হবে যেমন, সোডিয়াম, অ্যানিমেল প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং oxalate সমৃদ্ধ খাবার।

পঞ্চকর্মা থেরাপী

পঞ্চকর্মা থেরাপি হচ্ছে যোগাআসনের একটি পদ্ধতি। এই যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণভাবে শরীরকে শুদ্ধ করার একটি কার্যকর উপায়। এটি কিডনি পাথর থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।

কলা গাছের থোড়ের রস

কলা গাছের থোড় থেকে নিষ্কাশিত রস কিডনি পাথরের জন্য একটি চমৎকার প্রতিকার। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হিসাবে কাজ করে। আপনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে এই রস গ্রহণ করতে পারেন।

তুলসী পাতা

কিডনির সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য তুলসি পাতা ভালো। এক চামচ মধু দিয়ে এক টেবিল চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এটা মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে পাথরের সহজ নির্বাহ সাহায্য করে।

টমেটো জ্যুস

প্রতিদিন সকালে লবণ এবং মরিচের গুঁড়ো দিয়ে টমেটোর এক গ্লাস জ্যুস পান করতে পারেন।এতে কিডনির মধ্যে যে খনিজ লবণ থাকে সেটা দ্রবীভূত হতে সাহায্য করে।

পানীয় জল

প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করলে আপনার ঠিকমতো প্রস্রাব হবে। আর এতে কিডনি পাথর ভেঙ্গে বা দ্রবীভূত করতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, দৈনিক ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ উপযুক্ত পরিমাণে প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায় এবং কিডনির পাথরের ঝুঁকি এবং জটিলতা কমিয়ে আনে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button