ধর্ম ও জীবন

যে নামাজের জন্য উম্মতে মুহাম্মাদি হবে অগ্রবর্তী দল

ঝিনাইদহের চোখঃ

মানুষের নাজাতের অন্যতম মাধ্যম নামাজ। বিচার ফয়সালায় নামাজের হিসাবই আগে গ্রহণ করা হবে। আবার এ নামাজের কারণেই হাশরের ময়দানে উম্মতে মুহাম্মাদি অগ্রবর্তী দল হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে। আর সে নামাজ হলো জুমআর নামাজ।

জুমআর নামাজ প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান সম্পন্ন পুরুষের জন্য জামাআতে আদায় করা আবশ্যক। এটা মহান প্রভুর ঘোষণা-

‘হে ঈমানদারগণ! যখন জুমআর (শুক্রবার) দিন নামাজের জন্য আহ্বান করা হবে, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে জলদি হাজির হবে এবং বেচা-কেনা বন্ধ করে দেবে। এটিই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। যদি তোমরা তা উপলব্ধি করতে পার।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)

জুমআর নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা। উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য জুমআর দিন ও তার ইবাদত মহান প্রভুর নেয়ামত ও উপহার। এর ফলে উম্মতে মুহাম্মাদি বিচার দিনের ফয়সালায় অগ্রবর্তী দলের অন্তর্ভূক্ত হবে। বিচারের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে না। হাদিসে পাকে এসেছে-

‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘দুনিয়াতে আমাদের আগমনের সময়কাল হলো সব জাতির পরে। কিন্তু কেয়ামতের দিন আমরা হবো সবার অগ্রবর্তী দল। (সবার আগে আমাদের হিসাব-নিকাশ হবে) অবশ্য আমাদের আগে ওদেরকে (ইয়াহুদি ও নাসারা) কিতাব দেয়া হয়েছিল। আমরা কিতাব পেয়েছি ওদের পরে।

এই (জুমআর) দিনের তাজিম (মর্যাদা ও ইবাদত) ওদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা তাতে (এ দিনের ব্যাপারে) মতবিরোধ করেছিল।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে (উম্মতে মুহাম্মাদিকে এ দিনের মর্যাদা ও ইবাদতের ব্যাপারে) একমত হওয়ার তাওফিক দান করেন। সুতরাং সব মানুষ আমাদের পেছনে।

ইয়াহুদিরা আগামী দিনকে (আমাদের পরের দিন শনিবার) তাজিম (জুমআর দিন বলে মনে) করে। আর নাসারারা তার পরের দিনকে (রোববার) তাজিম করে।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে আল্লাহর পছন্দনীয় ও শ্রেষ্ঠ হলো জুমআর দিন শুক্রবার। সব জাতিকেই আল্লাহ তাআলা এদিনটি ইবাদতের জন্য দিতে চেয়েছেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্য কেউ এ দিনটিকে গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়নি। বরং তারা পরের দিন শনি ও রোববারকে বেছে নিয়েছে।

যেহেতু শনি ও রোববারের আগে আসে জুমআর দিন শুক্রবার, সে কারণেই উম্মতে মুহাম্মাদি যদিও সবার পরে পৃথিবীতে কিতাব লাভ করেছে এবং ইবাদতের দিন হিসেবে শুক্রবার লাভ করেছে, সে হিসেবে তারা সবার অগ্রবর্তী দলের মর্যাদা লাভ করবে।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত, আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ইবাদতের দিন জুমআর নামাজের আজানের সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়ার সব কাজ ছেড়ে দিয়ে কুরআনের নির্দেশ মোতাবেক মসজিদে উপস্থিত হওয়া।

হাদিসের ঘোষণা ও মর্যাদা রক্ষায় জুমআর হক যথাযথ আদায় করা উচিত। যারা জুমআর দিনের ইবাদত ও মর্যাদা রক্ষায় অগ্রবর্তী হবে বিচার ফয়সালার কঠিন মুহূর্তে তারাই হবে নাজাত লাভের অগ্রবর্তী দল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে জুমআর দিনের হক ও মর্যাদা যথাযথ অক্ষুন্ন রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ ঘোষিত নেয়ামত লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button