ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে কৌশলে আসছে ফেনসিডিল

আব্দুর রহমান মিল্টন, ঝিনাইদহের চোখঃ
—————-
ঝিনাইদহে ভারত সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে পাচার করে আনা হচ্ছে নিষিদ্ধ ফেনসিডিল। সাংবাদকিতার পরিচয়ে খুব সহজে বিভিন্ন সপিংব্যাগ, মার্কেটিং ব্যাগ সহ এমন নানা সামগ্রী ব্যবহার করে শত শত ভারতীয় ফেনসিডিল বাংলাদেশ সীমান্তে ঢোকানো হচ্ছে বলে স্থানীয়দের নানা অভিযোগ । আর এসব ফেনসিডিল চড়ামুল্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এছাড়া সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় নানা অপরাধ ও সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের তৎপরতা দেখা যায় বলে স্থানীয় ও সুবিধাবঞ্চিত অভাবীমানুষগুলোর নানা অভিযোগ রয়েছে ।

আজ শুক্রবার মিলেছে মাদক পাচার ও রাজধানী সহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া সংক্রান্ত এক চাঞ্চল্যকর তথ্য । বিকালে জেলা শহরের কাঞ্চননগর গ্রামের মডার্ণ মোড়ের মিনা পারভীনের ভাড়া বাড়ি থেকে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী রুবেল মিয়া(২৪) ও কৈতরী বেগম নামের এই দুই মাদক ব্যবসায়ী কে আটক করেছে ডিবি পুলিশ । এই মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থকে ১শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখানে থাকা নিয়ে দ’ুধরনের তথ্য দিয়েছে আটককারীরা, কোন সময় বলছে এটা তাদের বোনের বাসা আবার বলছে ভাড়াটিয়া। এদিকে এমন বিপুল পরিমান ফেনসিডিলের সরবরাহের আদান-প্রদান থাকায় মডার্ণমোড়, কাঞ্চননগর সহ এ অঞ্চলটি মাদকের জন্য ভয়াবহহ হয়ে যেতে পারে বলে অনেকের আশংকা ।

বিশেষ করে টিনেজ ও উঠতি বয়সী তরুনেরা নেশাক্ত ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়তে পাওে বলে আশংকা দেখা দিয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এসব মাদক সামগ্রী এ অঞ্চলে আসে বলে আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে। এই বিপুল পরিমান মাদক কিভাবে লোকানো ছিল বা কাদের নজরদারীতে পারাপার করা হতো সে বিষয়ে নজরদারী বাড়াবে পুলিশ এমনটি আশা সচেতন মানুষের । গত ৩মাস ধরে কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এই মাদককারকারী চলছিল তা নিয়ে বিস্তর কানাঘোষা চলছে । এছাড়া এলাকাটিতে অনেকে গাঁজা সহ নানা মাদক সামগ্রী বেঁচা-কেনা করে চলছে ।

এছাড়া গোয়েন্দা পুলিশ এমাদক-ফেনসিডিল ব্যবসায়ীর মুল হোতা সাংবাদিক পরিচয়দানকারী রুবেল মিয়া কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে । তারকাছ থকে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার ফটো সাংবাদিকের ভুয়া পরিচয়পত্র জব্ধ করেছে । এই মাদক ব্যবসায়ীরা সম্পর্কে ফুফাত ভাই-বোন বলে জানিয়েছে । তাদের বাড়ি ঝিনাইদহের পাশ^বর্তী জেলা মাগুরার পারনন্দলপুর গ্রামে । রুবেলের পিতার নাম আবুল মোল্লা আর তার ফুফাত বোন কৈতরীর স্বামীর নাম কামরুল মিয়া ।

সাংবাদিকতার আড়ালে ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ে নারী-পুরুষ সহ দুজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতারের এমন খবরে সাংবাদিকরা ভিড় করে ডিবি অফিসে। ডিবি পুলিশের হাতে আটক মাদক ব্যবসায়ী সাংবাদিকতার ভ’য়া পরিচয়ধারী রুবেল মিয়ার কাছ থেকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছেনে ।

সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদে রুবলে মিয়া নিজেকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফটো সাংবাদিক হিসাবে পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করে । তবে সে পত্রিকাটির সম্পাদকের নাম হিসাবে বলছে সাকিরুল ইসলাম মিলন । ঢাকার বাবুবাজারের একটি ৫মতলা ভবনের তৃতীয়তলাতে তাদের পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান কার্যালয় । আটক রুবেল মিয়া ডিবি পুলিশ ও সাংবাকিদের প্রশ্নের মুখে বলেন, তিনি পত্রিকায় ফটো জার্নাল হিসাবে কাজ করেন, তার সম্পাদকের নাম সাকিবুল ইসলাম মিলন ।

সাংবাদিকতার এমন ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে এই মাদক ব্যবসায়ী কথিত সাংবাদিকতায় ১ বছর ঘুকেছেন । সাংবাদিকতায় কি কি শিখেছে এমন প্রশ্নে সে কোন জবাব দেয়নি। তবে সে বলছে এই পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে জেলার সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলার ভারত সীমান্ত থেকে কিছু মহিলাদের মাধ্যমে ফেনসিডিল ব্যবসা করে আসছিল । মহেশপুরের মিলন সহ কয়েক নারী-পুরুষ এদের কাছে ফেনসিডিল সরবরাহ করত ।

 

এরপর ঝিনাইদহ-মাগুরা হয়ে এসব ফেনসিডিল রাজধানী ঢাকায় পৌছে দিত । প্রসঙ্গত ঝিনাইদহের মহেশপুর ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা । স্থানীয়রা জানায়, এই উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত ফেসসিডিলের রমরমা ব্যবসা হয় । চোরা সিন্ডিকেট, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও দৃর্বৃত্তশ্রেণীর মানুষ নিয়মিত ফেনসিডিল পাচার কওে আনে। আবার বভিন্নি শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধির বিভিন্ন গাড়িবহর, লাগেজ, ব্যাগ সহ নানা উপকরণের মাধ্যমে ফেনসিডিল বা কখনো অবৈধ অস্ত্র-শস্ত্র সীমান্তের এপাওে আসে এবং পর্যায়ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ।

ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর শেখ হাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে এসআই ইকবাল কবির সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শুক্রবার ভোরের দিকে এ অভিযান চালান। তবে আজ শুক্রবার দুপুরে আনুষ্ঠানকিভাবে সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করে গোয়েন্দা পুলিশ । জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান আরো জানান, অপরাধীচক্র দিন যতই যাচ্ছে ততই নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বনক করছে । এছাড়া বিভিন্ন পেশার কথা বলে ভুয়া পরিচয়ে নামে অপরাধ, মাদকের নতুনমাত্রা দেখতে প্ওায়া যাচ্ছে । অবশ্য জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ এসব ব্যাপাওে বাড়তি সতর্ক রয়েছে বলেও জানান ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button