ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

নির্যাতন ও বর্বরতার কথা মনে হলে এখনো গাঁ শিউরে ওঠে-ঝিনাইদহে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা

শাহজাহান আলী বিপাশ, ঝিনাইদহের চোখঃ
—————-
ঝিনাইদহের দুই বীরাঙ্গনা নারী মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পেলেন। তারা হলেন ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগর এলাকার বাসিন্দা জয়গুন নেছা ও কালিগঞ্জ উপজেলার মোল্লাকুয়া গ্রামের ফাতেমা বেগম।

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হাতে নির্যাতিত ১০ জন বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে সম্প্রতি গেজেট জারি করেছে সরকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৬০ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বীরাঙ্গনারা এ স্বীকৃতি পেলেন।

স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনা ফাতেমা বেগম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার বানুড়িয়া গ্রামের স্বামী সিরাজুল ইসলামের বাড়ি থেকে পিতার বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার চণ্ডিপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে কালীগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর এলাকা থেকে পাক হানাদার বাহিনীরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকদিন আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায়। সেখান থেকে ফিরে আসলেও স্বামী সিরাজুল তাকে গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাকোয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী তাকে বিয়ে করেন। তার রয়েছে ২টি ছেলে ও এক মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে তার স্বীকৃতি দাবি করে বিভিন্ন মহলে ঘুরেছেন। সমাজের কর্তাদের কাছে গেলে তারা অবহেলা করেছেন। সর্বশেষ শেখ হাসিনার সরকার এই বীরাঙ্গনা নারীকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রদান করেছেন।

বীরাঙ্গনা জয়গুন নেছা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বামী হাবিবুর রহমান ও সতিনের মেয়ে হাসিনা খাতুনকে হারিয়েছেন ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনগর পাড়ার বীরাঙ্গনা জয়গুন নেছা। পাক সেনারা তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে আর ফেরৎ দেয়নি। নিজের আর পরিবারের সদস্যদের উপর পাক বাহিনীর পাশবিক নির্যাতন ও বর্বরতার সেই নিকষকালো মুহুর্তগুলোর কথা মনে হলে এখনো গাঁ শিউরে ওঠে তার। শরীরে দগদগে সেই ভয়াল স্মৃতি চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা প্রমানে এই বৃদ্ধ বয়সে সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় ছুটেছেন এ অফিস থেকে সে অফিস। অবশেষে এ বছর সরকার তার স্বীকৃতি প্রদান করছেনে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button