ধর্ম ও জীবন

বিশ্ব ইজতেমা শুরু, নেই তেমন বিদেশি মেহমান

 

ঝিনাইদহের চোখ:

টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হাজার হাজার মুসল্লি আসতে শুরু করেন দেশের নানান প্রান্ত থেকে। একদিন আগে গতকাল বিকেল থেকেই আম বয়ান শুরু হয়েছে। গতকাল বাদ মাগরিব বয়ান করেন মাওলানা আহমদ লাট। তবে মাওলানা জুবায়েরের নেতৃত্বে প্রথম দুদিনের বিশ্ব ইজতেমায় গতকাল চোখে পড়ার মতো তেমন বিদেশি দেখা যায়নি। অন্যান্যবার ৬০ভাগ বিদেশি মেহমানের উপস্থিতি ছিল। তবে পুরো ইজতেমা ময়দান জুড়ে চোখে পড়ার মতো হাজার হাজার কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক এবছর বিশ্ব ইজতেমায় হাজির হয়েছেন। হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদরাসার শীর্ষ আলেমরা প্রথমবারের মতো ময়দানে ভিআইপি কামরায় অবস্থান করে বিশ্ব ইজতেমার তদারকি করছেন।

তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৪তম এই ইজতেমাতে এবারও বাংলাদেশসহ প্রায় ২০০টি দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ২০ দেশের প্রতিনিধিও আসেননি। তবে গতকাল থেকেই নামাজ, জিকির-আজকার, তসবিহ-তাহলিল ও দাওয়াত ইলাল্লাহ-এর মধ্যে মশগুল রয়েছেন মুসল্লিরা। তাদের নিরাপত্তার বিধান করেছে প্রশাসন। এ বিষয়ে গাজিপুর জেলা প্রসাশক দেওয়ান হুমায়ুন কবির ভোরের পাতাকে বলেন, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ২০ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। ইতোমধ্যে আমরা একটি বৈঠক করেছি। গাজিপুর জেলা পুলিশ গতকাল তাবলিগের সাথী ও মাঠের জিম্মাদার সাথীদের সাথে ময়দানের কাজের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন।

আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হবে। আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ১৮ ফেব্রুয়ারি এই বছরের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ইজতেমা সম্পন্ন করার জন্য ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নদী পারাপারের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তুরাগ নদের ওপর ৮টি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করেছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য টঙ্গী হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া এবছরও মোনাজাতের দিন মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৫টি বিশেষ রেলের ব্যবস্থা করবে। এদিকে টঙ্গী রেল স্টেশনে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার জানিয়েছেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে মুসল্লিদের রেলে যাতায়াতের জন্য ইজতেমার তিন দিন আগে থেকে প্রতিটি ট্রেন টঙ্গী স্টেশেনে ৩ মিনিট করে যাত্রা বিরতি করবে। এছাড়া আখেরী মোনাজাতের দিন ১০টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

অন্যদিকে শীত থাকায় ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা ঠাণ্ডা-জ্বর হাঁপানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে গাজীপুরের সব হাসপাতালের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া টঙ্গী সরকারি হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২০০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য হাসপাতালের স্থান বারান্দায় বর্ধিত করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন।

পুলিশের তথ্যমতে, এবারের ইজতেমায় বিশ্বের ১৫০টি দেশ থেকে মুসল্লিরা আসবেন। তবে ইজতেমা আয়োজকরা আশা করছেন ২য় পর্বে হলেও বিশ্বের ২০০টি দেশ থেকে মুসল্লিরা ইজতেমায় অংশ নেবেন। ইজতেমা ময়দান ১০০০টি সিসি টিভির মাধ্যমে মনিটরিং ও আকাশ পথে হেলিকপ্টার দিয়ে মহড়া দেওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button