ঝিনাইদহ সদর

ভিক্ষার চাউলে চলে ঝিনাইদহের লক্ষী’র সংসার

ঝিনাইদহের চোখঃ

এক সময় ছিল সোনার সংসার। স্বামী ও ২ ছেলে আর ১ মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। হঠাৎ স্ট্রোকে অচল হয়ে যায় শরীরের একপাশ। নষ্ট হয়ে যায় দৃষ্টিশক্তি। এরপর থেকেই নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। ছাড়তে হয় স্বামীর সংসার। স্বামীর ভাগ নিয়েছেন সতীন। এখন মাটির তৈরী কুড়ে ঘরে ঠাঁই হয়েছে লক্ষী দাসের।

৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাসের ভিক্ষার চাউলে চলে লক্ষীর পেট। বলছিলাম ঝিনাইদহ শহরের ষাটবাড়ীয়া এলাকার বস্তা ব্যবসায়ী মুকুল দাসের স্ত্রী লক্ষী দাসের কথা। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার নেবুতলা গ্রামের দাসপাড়ায় মায়ের বাড়িতে আছেন।

মঙ্গলবার নেবুতলা গ্রামের দাসপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় মাটির তৈরী ঘরের বারান্দায় শুয়ে আছেন লক্ষী দাস। হাতের অসহ্য ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন। নেই ওষুধ কেনার টাকা। চাউল আর আনাচ-পাতি না থাকায় রান্না হয়নি সকালে। ৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাস বেরিয়েছেন ভিক্ষা করতে। দুপুরে ফিরলে তবেই খাওয়া হবে।

লক্ষী দাস জানান, ৬ বছর আগে ষাটবাড়িয়ায় স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় স্ট্রোক হয় তার। স্ট্রোকে বাম হাত ও বাম পা অচল হয়ে যায়। সেই সাথে অন্ধ হয়ে যান তিনি। ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে চোখের চিকিৎসা করালেও ফেরেনি চোঁখের আলো। টাকা না থাকায় বড় কোন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেননি। অন্ধ হওয়ার বছর ২ যেতে না যেতেই স্বামী আবারো বিয়ে করেন। অচল হওয়ায় সতীনের সংসারে মেলেনি স্থান। বড় ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র ঘর বেধেছেন। আর মেয়েকে বিয়ে দেওয়ায় তিনি রয়েছেন স্বামীর বাড়িতে। ছোট ছেলে থাকে বাবার কাছে।

এখন বর্তমানে নেবুতলা গ্রামের মায়ের কাছে আছে লক্ষীদাস। গ্রামের মানুষ বিভিন্ন সময় সাহায্য করলেও এখন আর কেউ সাহায্য করেন না। মায়ের ভিক্ষার চাউলে চলে মা ও মেয়ের পেট।

অসহায় লক্ষীর চিকিৎসা বা সংসার চালানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রতিবেশীরা। লক্ষীদাসকে সাহায্য পাঠানোর জন্য তার বিস্বস্ত প্রতিবেশী আশরাফুল আলম ঠান্ডু (০১৭১২-৭৫৬৩৩৪ বিকাশ)। এছাড়াও নেবুতলা দাসপাড়ায় গেলে মিলবে এই অসহায়ের দেখা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button