অন্যান্য

৭৩ বছরে ৩ কোটি মানুষ হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ঝিনাইদহের চোখঃ

টার্গেট করে একটার পর একটা দেশে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া। পছন্দের সরকার বসাতে গোয়েন্দা বাহিনী দিয়ে দেশে দেশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো। বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে গোপন অভিযান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারাবিশ্বে এভাবেই আধিপত্য কায়েম রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আধিপত্য লড়াইয়ের এ মিশনে ১৯৪৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তি দেশটির হাতে নিহত হয়েছে ২ থেকে ৩ কোটি বেশি নিরীহ বেসামরিক মানুষ।
এটা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত মানুষের প্রায় দ্বিগুণ। ১০০ বছর আগের ভয়াবহ ওই যুদ্ধে নিহত হয় প্রায় দেড় কোটি মানুষ। সম্প্রতি ‘গ্লোবাল রিসার্চ : সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন’ প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে গত ৭৩ বছরে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাযজ্ঞের এ চিত্র উঠে এসেছে। কয়েক বছর ধরে গবেষণা করে রিপোর্টটি প্রস্তুত করেছেন মার্কিন ইতিহাসবিদ জেমস এ লুকাস।

রিপোর্ট বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া অবৈধ যুদ্ধ, সামরিক অভ্যুত্থান ও গোপন সামরিক অভিযান ‘শিকার’ হয়েছে বিশ্বের অন্তত ৩৭টি দেশ বা জাতি। এর মধ্যে ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে আফগানিস্তানে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’।

মার্কিন সেনাবাহিনী এখনও যুদ্ধ করছে সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়ায়। আর এসব যুদ্ধ ও সংঘাতে বিশাল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। মৃত্যুর পাশাপাশি ঘটেছে অগণিত আহত হওয়ার ঘটনা। বিমান হামলা আর অত্যাধুনিক সব অস্ত্রের আঘাতে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছে এসব মানুষ।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, যুদ্ধে প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির বিপরীতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এর মানে মার্কিন বাহিনীর হাতে আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০ থেকে ৩০ কোটি মানুষ।

জেমস লুকাসের গবেষণার বরাত দিয়ে ‘অ্যাটাক দ্য সিস্টেম ডটকম’র প্রধান সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কেইথ প্রেস্টন সম্প্রতি প্রেটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মার্কিন সরকার ওইসব অঞ্চলে দারিদ্র্য, অপরাধ, বর্ণবাদ ও সহিংসতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কখনই শীর্ষ পর্যায়ে ছিল না, বরং দেশ ও বিদেশে ব্যাপক হারে অপরাধ ও কুকর্ম করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটা আধুনিক সাম্রাজ্যবাদী, যা আগে ছিল ব্রিটেন।’

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মঙ্গলবার বলেছেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে বিশ্বে শীর্ষস্থানে ছিল ট্রাম্প সরকারের আমলে এসে তা হারিয়ে গেছে।
আমেরিকার ৩৯তম প্রেসিডেন্ট ৯৩ বছর বয়সী কার্টার বলেন, ‘মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়া উচিত ছিল। কারণ আমরা শুধু সামরিক শক্তির কারণে সুপার পাওয়ার নই, বরং সেখানে মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকারও রয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button