জানা-অজানা

নির্যাতিত নারীর জবানবন্দি নেবেন নারী ম্যাজিস্ট্রেটরা

ঝিনাইদহের চোখঃ

সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি নেওয়ার দায়িত্ব নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

আজ মঙ্গলবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেন সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

সম্প্রতি দেশে কয়েকটি নারী নির্যাতনের ঘটনা ও ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশনা দিলেন।

প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ সার্কুলারে বলা হয়, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে ওয়াকিবহাল ব্যক্তির জবানবন্দি উক্ত আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়।’

‘অপরাধের তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে লিপিবদ্ধকৃত উক্ত জবানবন্দি অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মস-এর গোচরীভূত হয়েছে যে, বর্তমানে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী বা শিশুদের জবানবন্দি পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। একজন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট নারী বা শিশু ভিকটিম ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিতে সংকোচবোধ করে। ফলে এরূপ নির্যাতনের শিকার শিশু বা নারী ঘটনার প্রকৃত বিবরণ দিতে অনেক সময় ইতস্তত বোধ করে।’

সার্কুলারে বলা হয়, ‘এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা আবশ্যক। এতে নারী ও শিশু ভিকটিমরা সহজে ও নিঃসংকোচে তাদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে পারবে।’

‘এমতাস্থায় সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অর্পণের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশিত হয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেল।’

তবে সংশ্লিষ্ট জেলা বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই দায়িত্ব অর্পণ করা যেতে পারে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়।

সার্কুলারের নির্দেশনাবলি অনুসরণে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনার জন্যও বলা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button