টপ লিডমহেশপুর

ঝিনাইদহে হয়ে গেল ঐতিহাসিক চড়কপুঁজা

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহে সনাতন ধর্মের মতালম্বিদের ঐতিহাসিক চড়কপুঁজার মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও মেলার শেষদিন একে একে ৭ সন্ন্যাসিকে একই ভাবে পিঁঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক গাছে রশির সাথে বিশেষ ভাবে বেঁধে ঘোরানো হয়।

এছরের ৭ সন্ন্যাসি হল-ফতেপুর গ্রামের বকুলতলা পাড়ার শ্রী অসিত কুমার, রথিন দাস, বিপ্লব কর্মকার, অধির হালধার, সাধন বাবু রায়, বসু বাবু রায় ও মাহাদেব হালধার।

এবছর মেলার সভাপতি শ্রী সাধন কুমার ঘোষ বলেন, প্রতি বছরই মেলাটি পহেলা বৈশেখ শুরু হয়ে তিনদিন পর্যন্ত চলে। মেলার শেষ দিন মঙ্গলবার একে একে ৭ সন্ন্যাসিকে একই ভাবে পিঁঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক গাছে রশির সাথে বিশেষ ভাবে বেঁধে ঘোরানো হয়। তবে কবে বা কখন থেকে এ মেলা শুরু হয়েছে তা সঠিক ভাবে কেউ জানে না। তবে প্রবীন হিন্দুরা লোকমুখে শুনেছেন, সেন বংশের শাসন আমলে এ চড়কপুঁজাটি কাশ্মির থেকে শুরু হয়। সে সময় এক শিব ভক্ত জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। তাকে বিভিন্ন ভাবে সারানো চেষ্টা করা হয়। পরে তার পিঠে বড়শি ফুটিয়ে রক্ত ঝরিয়ে শিবকে পুঁজা করার পর রোগমুক্ত হন বলে লোকমুখে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ আমলে জর্জ সাহেব শ্রী অমুল্য কুমার চট্রোপাধ্যায়, কোলতাতা কলেজের আঙ্ক শাস্ত্রেও পন্ডিত ও শিক্ষাবিদ নরেন্দ্রনাথ মজুমদার, এবং সে সময় কাশ্মির মহারাট্রের মন্ত্রি শ্রী মিলাম্বর মুখোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন ব্যাক্তির পৃষ্টপোষকতায় মেলাটি পরিচালিত হত। সে সময় তারা মেলাটি কপোতাক্ষ নদের পাড়ে শ্রী অমুল্য কুমার চট্রোপাধ্যায়ের (জর্জ) বাড়ির নিকট মেলাটি অনুষ্ঠিত হত। পরে দেশ বিভক্তের পর অনেক প্রভাব পতিপত্তিশালী হিন্দু সম্প্রদায় ভারতে পাড়ি জমানো পর মেলাটি ক্রমান্বয়ে তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button