
কামরুজ্জামান লিটন, ঝিনাইদহের চোখঃ
আন্তর্জাতিক শিশু উৎসবে অংশ নিতে তুরস্ক গিয়েছিল নৃত্যশিল্পী সেঁজুতি শহীদ স্নেহা।
সেঁজুতি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার ২নং মির্জাপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত যোগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোং লিমিটেডের যশোর জোন অফিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব শহীদুল ইসলাম ও শিপ্রা ইসলামের একমাত্র মেয়ে।
সেঁজুতি কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।
প্রতি বছর ২৩শে এপ্রিল আন্তর্জাতিক শিশু উৎসবের আয়োজন করে থাকে তুরস্ক রেডিও টেলিভিশন (TRT) কর্তৃপক্ষ।
এই উৎসবে বিশ্বের ৪৫টি দেশের শিশু কিশোররা নৃত্যের মাধ্যমে তাদের দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
এ বছর সারা দেশের ৬৮ জন নৃত্যশিল্পীর মধ্য থেকে নৃত্য প্রতিযোগীতা ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ১৬ সদস্যের একটি টিম গঠন করে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। এই টিম শিশু একাডেমির নৃত্য প্রশিক্ষক জনাব নাজিব মাহফুজ লিখন এর অধীনে দীর্ঘ ১ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে গত ১২ এপ্রিল প্রথম প্রহরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ে।
অভিভাবক হিসাবে সাথে ছিলেন শিশু একাডেমির পরিচালক জনাব আনজীর লিটন ও নার্গিস সুলতানা। দলটি ইস্তাম্বুল, স্যামসুন ও আঙ্কারায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। ২৩শে এপ্রিল আঙ্কারার প্রেসিডেন্ট হাউজে তুরস্কের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এর উপস্থিতিতে ‘গালা’ শো’তে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল। ৩০শে এপ্রিল ভোরে সেঁজুতিরা দেশে ফেরে।
স্কুলের দরজায় পা রাখার আগেই মাত্র সাড়ে ৩ বছর বয়সে রাজশাহীর নিক্কণ শিল্পী গোষ্ঠীর শিক্ষাগুরু জনাব হাসিব পান্নার কাছে সেঁজুতির পায়ে প্রথম নূপুর বেজে ওঠে।তারপর টুম্পা, কাবেরী সরকার, কুষ্টিয়ার রুমি, বাদল, স্বপন দাস, ঢাকার ছোঁয়া, তাবাসসুম আহমেদ, মুনমুন আহমেদ, সাজু আহমেদ, এম আর ওয়াসেক এবং কোলকাতার সোমা গিরির মত বরেণ্য নৃত্যগুরুদের কাছ সেঁজুতি বাচের তালিম নিয়েছে।
কত্থক নৃত্যের জীবন্ত কিংবদন্তী পন্ডিত বিরজু মহারাজের কাছেও তালিম নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে সেঁজুতির।
এরই মধ্যে ২০১৬ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় সৃজনশীল নৃত্যে সারাদেশের মধ্যে ১ম স্থান অধিকার করে সেঁজুতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি
জনাব এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এর নিকট থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণসহ কত্থক, সৃজনশীল ও লোকনৃত্যে পাঁচ বার জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
এছাড়া স্কুল, উপজেলা, জেলা ও অঞ্চল/বিভাগ পর্যায়ের প্রতিযোগীতায় সেঁজুতি অর্ধশতাধিক পুরস্কার অর্জন করেছে।
নাচ এখন সেঁজুতির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ।