দেখা-অদেখা

‘সাতঘরিয়া’ পরিবর্তিত হয়ে ‘সাতক্ষীরা’

ঝিনাইদহের চোখঃ

খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল সাতক্ষীরা জেলা। এই জেলাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত। প্রথম ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা হিসেবে স্থান লাভ করে। শেষে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয় এবং ২টি পৌরসভা, ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা নিয়ে গঠিত হয় এই জেলা।

সাতক্ষীরা জেলার নামকরণ এর ব্যাপারে বেশ কয়েকটি মতবাদ প্রচলিত আছে। এর মধ্যে প্রথমটি হল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এক কর্মচারী বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী নিলামে বুড়ন পরগণা কিনে তার অন্তর্গত সাতঘরিয়া গ্রামে বসবাস করেন। তার পুত্র প্রাণনাথ সাতঘরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করে বেশ সুনাম অর্জন করেন।

সাতক্ষীরা মহকুমার প্রকৃত জন্ম হয় ১৮৫২ সালে। যশোর জেলার চতুর্থ মহকুমা হিসেবে এবং কলারোয়াতে এর সদর দপ্তর স্থাপিত হয়। ১৮৬১ সালে মহকুমা কার্যালয় সাতঘরিয়া তথা সাতক্ষীরাতে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে সাতঘরিয়া তখন ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে পরিবর্তিত হয়ে সাতক্ষীরা হয়ে গিয়েছিলো। আর এভাবেই পুরানো সাতঘরিয়া পরিবর্তন হয়ে বর্তমানের সাতক্ষীরা।

সাতক্ষীরা জেলার অর্থনীতি অনেক কিছুর উপর নির্ভরশীল। তবে এখানকার চিংড়ী চাষ সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে অর্থনীতির উপর। এই জেলায় ৩০৪৬টি মৎস্য খামার, ৩৬৫০টি চিংড়ি খামার ও ৬৬টি হ্যাচারি রয়েছে। সাতক্ষীরার দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ মৎস্যচাষের উপর নির্ভরশীল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করা হয় এখানকার চিংড়ি। সাতক্ষীরার বাগদা ও গলদা চিংড়ি বহিঃবিশ্বে বেশ কিছু স্থানে হোয়াইট গোল্ড নামে পরিচিত।

সাতক্ষীরা জেলার দর্শনীয় স্থান: সুন্দরবন, মান্দার বাড়ি সমুদ্র সৈকত, যশোরেশ্বরী মন্দির, নলতা রওজা শরীফ, নীলকুঠি, মায়ি চম্পার দরগা, বৌদ্ধ মঠ, মোজাফফর গার্ডেন, আব্বাস গার্ডেন, জাহাজঘাটা-ভুরুলিয়া, বনবিবির বটগাছ, ভোমরা স্থল বন্দর, লাবসা, তেঁতুলিয়া মসজিদ, জমিদার হরিচরনের বাড়ি, আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার ইত্যাদি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button