ঝিনাইদহের চোখঃ
বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ আহমেদ ওরফে মাহাদি ওরফে মাহিবি জাহানের স্ত্রী চিত্রনায়িকা শিমলার হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। আলোচিত এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা চিত্রনায়িকা শিমলার খোঁজে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত শিমলাকে তদন্ত সংস্থার কাছে হাজির হতে দু-এক দিনের মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘মামলার সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ মামলার চার্জশিট দিতে পারব।’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া বলেন, ‘চিত্রনায়িকা শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
বিভিন্ন মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিকবার তার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কথাও বলেছি। কিন্তু কেউ শিমলার হদিস দিতে পারেননি। তদন্ত দলের কাছে হাজির হতে দু-এক দিনের মধ্যে তাকে নোটিস দেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চিত্রনায়িকা শিমলা বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তাকে দেশে এসে তদন্ত দলের কাছে হাজির হওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হয় বিভিন্ন মাধ্যমে। কিন্তু তিনি হাজির হননি। তার এ আচরণ সন্দেহের চোখে দেখছে তদন্ত দল।’
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার তদন্ত করতে নেমে এ পর্যন্ত ১৬ জনের জবানবন্দি সংগ্রহ করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এ পর্যন্ত যারা জবানবন্দি দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে বিমানের ক্রু, বিমানবন্দরের বিভিন্ন কর্মকর্তা রয়েছে।
এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ একজন মনে করা হচ্ছে চিত্রনায়িকা শিমলাকে। কারণ পলাশ বিভিন্নজনকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। পলাশের আত্মীয়স্বজনসহ বিভিন্নজন দাবি করছে পলাশের সংগ্রহ করা টাকাগুলো শিমলা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ দুঃখ, ক্ষোভ থেকে নাটকীয় কিছু একটা করে এ সংকটের সমাধান চেয়েছিলেন পলাশ, যার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিমান ছিনতাইয়ের ব্যর্থ চেষ্টা।
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন পলাশ আহমেদ। বিমানটি ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টার পর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে প্যারাকমান্ডো অভিযান চালিয়ে জিম্মিদশা থেকে বিমানটি মুক্ত করা হয়। অভিযানে নিহত হন ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ আহমেদ। এ ঘটনায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে নিহত পলাশ আহমেদসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে।
বিডি প্রতিদিন