কুষ্টিয়া; সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের জেলা

ঝিনাইদহের চোখঃ
বাংলাদেশের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ রাজধানী খ্যাত খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল কুষ্টিয়া জেলা। কুষ্টিয়া খুব একটা প্রাচীন নগর নয়। পূর্বে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অর্থাৎ নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের সময় কুষ্টিয়া একটি আলাদা জেলা হিসেবে প্রকাশ পায়। মুঘল সাম্রাজ্যর শাসক শাহজাহানের শাসনামলে এই কুষ্টিয়াতে একটি নদীবন্দর স্থাপন করেন।
কুষ্টিয়া নামটি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। তবে হেমিলটনস-এর গেজেটিয়ার সূত্রে পাওয়া মতটিই সর্বজন স্বীকৃত। এই মতানুসারে- কুষ্টিয়ায় প্রচুর পরিমাণে পাট উৎপাদন হতো। পাটকে স্থানীয়রা ‘কোষ্টা’ বা ‘কুষ্টি’ বলতো। আর এ থেকেই কুষ্টিয়া নামটি এসেছে। আবার অনেকের মতে ফারসি ‘কুশতহ’ শব্দটি থেকে কুষ্টিয়া নামকরণ হয়েছে যার অর্থ ছাই দ্বীপ। তবে সম্রাট শাহজাহানের সময় কুষ্টি বন্দরকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের উত্থান বলেও অনেকের ধারণা।
১৮৬০ সালে কলকাতার সাথে এ জেলার সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন হওয়ার পর থেকে এখানে অনেক শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠে। তার প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। দেশ সেরা কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এই কুষ্টিয়ায়।
বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির অনেক স্বনামধন্য ব্যাক্তিবর্গ এ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেছেন। রয়েছে মীর মোশাররফের বসত ভিটা। তাছাড়াও আরো অনেক স্বনামধন্যদের রেখে যাওয়া বসতভিটা এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
কুষ্টিয়া জেলায় বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি ও টেগর লজ, লালন শাহ্ এর মাজার। এসব জায়গা ছাড়াও দেখার মতো কিছু স্থান হল গোপিনাথ জিউর মন্দির, ঝাওদিয়ার শাহী মসজিদ, পরিমল থিয়েটার ইত্যাদি।
এসব জায়গা একটু ঘুরে দেখলেই কুষ্টিয়া জেলার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেকটা ধারণা পাওয়া যাবে।