আমার ঈদ …নিলুফার এহসান
ঝিনাইদহের চোখঃ
সেই যে মেয়েবেলা …
কিশোরী আমি …
আমার ঈদ …
নতুন ফ্রক … মা’র হাতের সেমাই ….. জর্দা .. পোলাও মাংস… এপাড়া ওপাড়া ঘুরে বেড়ানো .. খালাদের বাড়ী .. চাচা ফুপুদের বাড়ী … বান্ধবীদের বাড়ি ঘুরে বেড়ানো … কি উচ্ছাস !!!
বাড়ী বাড়ী সেমাই মিষ্টি খাওয়া .. পাঁচ দশ টাকা ঈদ সালামী পাওয়া … কোন কোন ঈদে আরো দুই একটা বাড়তি জামা উপহার পাওয়া … আনন্দে আহ্লাদে গলে গলে পড়া ….
মেহমানের আনাগোনা .. কাচের বাটি চামচের টুংটাং … বাঘাটের দই .. সাথে একটু সেভেনআপ …. কি আনন্দ !! কি আনন্দ !!!
খুশীতে ভাললাগায় কিশোরী কন্যার কলিজা ভরপুর ….
দিনশেষে টিভিতে বাংলা পূর্নদৈর্ঘ্য ছায়াছবি … ঈদের নাটক … আনন্দমেলা .. কি উৎকন্ঠা …কি উদ্বেগ …. কি উচ্ছাস … সারাদিনের ক্লান্তিশেষে দ্বিগুন ঈদের আনন্দ নিয়ে ঘুম ….সকালবেলা আপারা আসবে …. ওরা ঈদের পরদিন আসে …. আপার আসাটা কিশোরী আমার কাছে নতুন আর একটা ঈদের মতন …..
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই মনেহওয়া আর কত দেরী ? কতক্ষনে আপা আসবে ? আপা আসলেই খালারা , চাচারা , চাচীরা , ফুপুরা সবাই এক এক করে আসবে … কাজিনরা আসবে … কি অদ্ভুত আনন্দ চারিদিকে … কি উৎসব উৎসব পরিবেশ চারপাশে …. ফুলআলা তোলা কাচের বাসনকোসন বের হওয়া … বড় কাচের জগটা সাবধানে নামানো ….. চায়ের কাপগুলো টেবিলে সাজানো …. চারিদিকে ঈদ ঈদ আর ঈদ …..
কয়দিন খুব আড্ডা …. গল্প … মিলনমেলা …. ঈদের সাথে ২/৩ দিন বাড়তি ঈদ … তারপর দুম করে ওদের ফিরে যাওয়া …. আর পিছনে পেয়ারাতলায় বাউন্ডারি ঘেষে মা সহ আমাদের সকলের পথেরদিকে তাকিয়ে থাকা ….. যতদুর দেখা যায় ,শুধুই তাকিয়ে থাকা ….. ঝুপ করে ঈদটা শেষ হয়ে যাওয়া ……
কিশোরীমনের চাপা একটা অভিমান …আর একটাদিন কেন থেকে গেল না ?