ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে তরল দুধ ও বোতলজাত পানির দাম প্রায় সমান!

#ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহ জেলায় গরুর দুধ আর বোতলজাত পানির প্রায় সমান দাম। দুধের দর পতনে গাভী পালনকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে প্রতি লিটার দুধ ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দামে দুধ বিক্রি করে পোষাচ্ছে না খামারিদের। ঝিনাইদহ জেলায় গাভী পালনের সংখ্যা বেড়েছে। সে সঙ্গে বেড়েছে দুধের উত্পাদন।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলায় দুধেল গাভীর সংখ্যা দুই লাখ ৬২ হাজার। বার্ষিক ৯০ হাজার টন দুধ উত্পাদন হচ্ছে।

শৈলকুপা, কালীগঞ্জ, মহেশপুর ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বেশি পরিমাণ দুধ উত্পাদন হয়ে থাকে। শৈলকুপা, গাড়াগঞ্জ, কাতলাগাড়ি ও হাট ফাজিলপুরে দুধের হাট বসে। এ ছাড়াও ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ ও মহেশপুরে দুধের বাজার বসে। দৈ মিষ্টি তৈরিকারীরা এ দুধের প্রধান ক্রেতা। বাজারে তারা না এলে দর পড়ে যায়। শৈলকুপার দুধের বাজারগুলোতে প্রতিদিন দুই হাজার লিটার দুধ বিক্রির জন্য উঠছে; কিন্তু বর্তমানে এত দুধের চাহিদা নেই। প্রতি লিটার গরুর দুধ ২৫/৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গ্রামে দুধ প্রতি লিটার ২২ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতলজাত পানির দাম ২০ টাকা। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুধের দাম কম থাকে। শীতকালে লোকে পিঠা-পায়েস তৈরি করে। তখন দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। দামও চড়ে যায়।

অপর দিকে গো-খাদ্যের দাম চড়ে গেছে। শৈলকুপা উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের গাভী পালনকারী চাঁদ আলী শেখ জানান, এক কেজি গমের ভুসি ৩৫ টাকা, এক কেজি চালের খুদ ২৫ টাকা, এক কেজি ধানের কুঁড়া ২০ টাকা, এক আঁটি কাঁচা ঘাস ২০ টাকা ও এক আঁটি খড় ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, একটি উন্নত জাতের গাভী পালন করতে দৈনিক দেড়/দুইশ টাকার গো-খাদ্য লাগে। ১০ কেজি দুধ হলে বিক্রি করে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় হয়। এতে গাভী পালনকারীদের লাভ হচ্ছে না। মিষ্টি ও দৈ প্রস্তুতকারীরা সস্তা দামে দুধ কিনে ড্রাম বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে।

গাভী পালনকারী মানিক মণ্ডল বলেন, দুধ বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। বছরে গাভী প্রতি একটি করে বাছুর হয়। বাছুর বিক্রির টাকায় তারা টিকে আছে। শৈলকুপা মামুদপুর এলাকায় মিল্কভিটার একটি দুধ ক্রয় কেন্দ্র ছিল। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাফজুর রহমান জানান, শহর এলাকায় দুধের দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। গ্রামে প্রতি লিটার ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসের পর দুধের দর পতন হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন গ্রামে দুধের ক্রেতা নেই। মানুষের দুধ খাওয়া অভ্যাস কম। উন্নত জাতের গাভী পালন বেড়েছে। উন্নত জাতের গাভীর দুধ বেশি হয়। কোনো কোনো গাভী দিনে ১৫-২০ লিটার দুধ দেয়। কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হয় বর্ষাকালে। এতে দুধ বেশি হয় বলে তিনি আরো জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button