#ঝিনাইদহের চোখঃ
ভাঙ্গন ধেয়ে আসছে বিদ্যালয়ের দিকে, যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে পাঁকা ভবনটি। ঝুঁকিতে রয়েছেন শিক্ষাক আর শিক্ষার্থী শিশুরা। বিদ্যালয়ের মাঠ পেরিয়ে ভবনের পাশ দিয়ে চিত্রা নদীতে এলাকার পানি নামায় এই অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে। ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের কিছু জমিও চলে গেছে চিত্রায়। এই অবস্থা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির।
শিক্ষকরা বলছেন, কোনো ভাবেই তারা এই ভাঙ্গ রোধ করতে পারছেন না। বর্ষা মৌসুমে গোপালপুর গ্রামের পশ্চিমাঞ্চলের পানি তাদের স্কুলের মাঠ পেরিয়ে ভবনের খুব কাছ দিয়ে চিত্রা নদীতে পড়ে। এই পানির শ্রোত এতো বেশি থাকে যে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। তাদের ভাষায় এখানে প্যালাসাইট দিয়ে বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে পানির গতিপথ ঘুরানোর কোনো বিকল্প নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের একটি গ্রাম গোপালপুর (পীর-গোপালপুর)। এই গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। নদীর পাড়েই রয়েছে গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এই বিদ্যালয়ে ৬ কক্ষের ২ টি ভবন রয়েছে। যা উত্তর-দক্ষিন লম্বা। ভবনের পেছনেই রয়েছে নদীটি। যেখানেও রয়েছে বেশ কিছু ভাঙ্গনের চিহ্ন, যা বিদ্যালয়ের কিছুটা জমি ইতিমধ্যে গ্রাস করেছে। আর বিদ্যালয়ের দক্ষিনে রয়েছে বড় একটি ভাঙ্গন।
মাঠের অনেকটা জায়গা দখল করে নিয়েছে এই ভাঙ্গন। ভাঙ্গনটি ক্রামান্বয়ে বিদ্যালয় ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ভবনের আনুমানিক ৬ থেকে ৭ ফুট কাছে চলে এসেছে। এবারের বর্ষা মৌসুমে ভবন বঁচানো নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষক ও এলাকার মানুষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জামিরুল ইসলাম জানান, ৯৯ শতক জমির উপর ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৪২ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। প্রতিষ্টানে শিক্ষক আছেন ৭ জন, আর এমএলএসএস ১ জন। বিদ্যালয়টি এলাকার মধ্যে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি জানান, গত দুই বছর হচ্ছে এই বিদ্যালয়ের মাঠ পেরিয়ে গোপালপুর গ্রামের ও গ্রামের মাঠের কিছু অংশের পানি চিত্রা নদীতে যায়। এই পানির ইতিপূবে মাঠের দক্ষিন পাশ দিয়ে রাস্তার ধার ঘেষে নদীতে যেতো। এখন বিদ্যালয়ের মাঠ পেরিয়ে যাওয়ায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। পানির শ্রোত এতো বেশি যে ভাঙ্গন ক্রমেই বাড়ছে, এগিয়ে আসছে বিদ্যালয় ভবনের দিকে। ভাঙ্গনের কারনে বর্তমানে ভবনটি ধসে পড়ার আশংকার মুখে রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক জামিরুল ইসলাম আরো জানান, বিদ্যালয়ের পশ্চিম দিয়ে বয়ে যাওয়া চিত্রা নদীতেও অনেকটা জমি গ্রাস করেছে। তারা নদীর পাড়ে বনজ গাছ রোপন করে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করেছে। তারপরও ভাঙ্গন অব্যহত রয়েছে। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে নদীর পাড় প্যালাসাইট দিয়ে বাঁধ দেওয়া জরুরী। তাহলে মাঠের উপর দিয়ে পানি যাওয়া বন্ধ হবে, নদী ভাঙ্গনও বন্ধ হবে। এতে রক্ষা পাবে বিদ্যালয় ভবনটি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা জানান, তারা স্থানিয় ভাবে একদফা এই ভাঙ্গন ঠেকাতে মাটি দিয়ে বাঁধ দিয়েছিলেন। কিন্তু পানির শ্রোত তাদের সেই বাঁধ ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন তাদের প্রয়োজন নদীর মধ্যে প্যালাসাইট দিয়ে বাঁধ দেওয়া।
এ বিষয়ে তিনি স্থানিয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিকট ধর্না দিয়েছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তিনি বলেন, দ্রæত এই বাঁধ দিতে না পরালে স্কুলটি মারাত্বক ক্ষতির মুখে পড়বে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাঃ সেলিনা আকতার বানু জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তাকে কেউ কোনো তথ্য দেননি। তবে তিনি খোজ নেবেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্তায় থাকলে তা কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়েও ব্যবস্তা নেবেন।