কোটচাঁদপুরে অবৈধ গর্ভপাতের মূলহোতা রিনা পারভিন আটক
#সুমন মালাকার, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে অবৈধ গর্ভপাতের মূলহোতা কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া রিনা পারভিন (৩৫) কে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধায় নিজ বাসা থেকে (হাসপাতাল কোয়ার্টার) তাকে আটক করা হয়। এর আগে তার এই কাজে সহযোগিতার জন্য রিনার গাড়ী চালক উপজেলার জগনাথপুর গ্রামের মইদুল ইসলামের ছেলে নাহিদ হাসার রকি (২৩) কে দুপুরের দিকে আটক করে পুলিশ।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম জানান, কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া রিনা পারভিন দীর্ঘদিন যাবত এই হাসপাতালে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে গর্ভপাত করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (২০ জুলাই) শহরের নওদা গ্রামের আক্কাস আলী দম্পতির সরলতার সুযোগ ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাচ্চা বেঁচে নেয় বলে সাত মাস বয়সের নবজাতককে অবৈধভাবে গর্ভপাত করে।
এবং বাচ্চাটিকে শপিং ব্যাগে করে হাসপাতালের পরিত্যাক্ত ভবনের পাশে ফেলে রাখে। পরে চা ব্যবসায়ী মনু মিয়ার স্ত্রী নার্গিস বেগম নবজাতকসহ শপিং ব্যাগটি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার পর নবজাতকটি মারা যায়।
নবজাতকের বাবা আক্কাস আলীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে রিনার অবৈধভাবে গর্ভপাতের বিস্তারিত ঘটনা পুলিশকে জানায়। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে নবজাতক হত্যায় ৩১৬ ধারায় মামলা দায়ের হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জের ঢাকালে পাড়ার মৃত আজগর আলীর মেয়ে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া রিনা পারভিনকে আটক করে।
এদিকে রিনা আটকের পর এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আয়া রিনা পারভিন অবৈধ গর্ভপাত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এঘটনায় তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুর রশিদ জানান, রিনার বিরুদ্ধে অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ পেয়েছি। তার এই কর্মকান্ডের বিষয়ে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিব।
অপরদিকে কোটচাঁদপুর পৌর শহরের নওদা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে বেরিয়ে আসে এক অন্য কথা।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন যে, তারা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তেমন কোন মিল ছিলো না তার কারন তার স্ত্রীর চাহিদা (বিলাসিতা) ছিলো অন্য রকমের। কিন্তু সেই চাহিদা তার গরিব কৃষক স্বামীর পক্ষে মেটানো সম্ভব ছিলো না।
তাদের দম্পতি জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তাদের পড়ালেখা করানো এবং তাদের চাহিদা পূরন করে তার স্ত্রীর চাহিদা পূরণ করা ছিলো তার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তার স্ত্রী চাচাতো দেবরের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আর তাদের এই অবৈধ সম্পর্কের ফল সরূপ ববিতা খাতুন গর্ভধারন করেন।
কিন্তু আক্কাস আলী এটা মেনে নিতে পারছিলেন না। আর এই সুযোগে ববিতা খাতুনও বলেন তিনি গর্ভপাত করতে রাজি। তখনি তিনি তার স্বামীকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া রিনা পারভিন (সম্পর্কে তাদের মামী) এর কাছে এসে কিছু টাকা দিয়ে অবৈধ গর্ভপাত করান এবং নবজাতককে শপিং ব্যাগে করে বাগানে ফেলে দেন।
সুমন মালাকার