মশার কামড় থেকে যেসব খাবার বাঁচাবে
#ঝিনাইদহের চোখঃ
বলা বাহুল্য অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ডেঙ্গুর প্রকোপ একটু বেশিই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বর্তমানে ঘরে ঘরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে মারাও যাচ্ছেন অনেকে। ফলে আমাদের সবার মধ্যেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বর্তমান পরিস্থিতি এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে, হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই সব থেকে বেশি দেখা যাচ্ছে। যা বর্তমানে ভয়াবহ দুশ্চিন্তার ব্যাপার।
এর হাত থেকে রেহাই পেতে কমবেশি সবাই ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ নিচ্ছেন। যেমন, বাসায় গাছের টবে পানি জমিয়ে না রাখা, মশারি টাঙ্গিয়ে ঘুমানো কিংবা মশা তাড়ানোর স্প্রে ব্যবহার করা।
তবে, মশার কামড় থেকে বাঁচতে এসব সচেতনতার পাশাপাশি কিছু খাবারের দিকেও মনোযোগ দিতে দেয়া আবশ্যক। আমাদের প্রত্যেকের শরীরে নিজস্ব গন্ধ থাকে। মূলত এই গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে মশা আমাদের শরীরের কাছে আসে।
তাই মশা যেন শরীরের গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে কাছে না আসে এজন্য কিছু খাবার খাওয়া যেতে পারে। এই খাবারগুলো শরীরের নিজস্ব গন্ধকে নষ্ট করে আলাদা গন্ধ নিঃসরণ করে। নতুন এই গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। ফলে আর শরীরের কাছেও ঘেঁষে না।
তবে জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো কী কী:
পেঁয়াজ ও রসুন
মশা তাড়াতে রসুনের জুড়ি নেই। রসুনে অ্যালিসিন নামে এক ধরনের উপাদান থাকে। রসুন খেলে শরীরের লোমকূপ দিয়ে অ্যালিসিন বের হয়। ফলে মশা শরীরে বসে না। পেঁয়াজও মশা তাড়াতে রসুনের মতোই কার্যকরী। তবে এক্ষেত্রে রসুন ও পেঁয়াজ কাঁচা খাওয়া ভালো।
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
মশা তাড়াতে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার হচ্ছে বহু বছর ধরে। এর গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। এখন যেহেতু এডিস মশার উৎপাত বেশি, তাই প্রতিদিন খাবারে ব্যবহার করুন অ্যাপল সাইডার ভিনেগার।
স্যুপ, সালাদ কিংবা যেকোন পানীয়ের সঙ্গে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। মধু ও অ্যাপল সাইডার ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়েও দিনে একবার করে পান করতে পারেন। এতে শরীরে যে গন্ধ তৈরি হবে, তা মশা সহ্য করতে পারবে না।
কাঁচা মরিচ
কাঁচা মরিচে থাকে ক্যাপসাইসিন। বলা হয়, এই উপাদানটি মশার জীবাণুর সঙ্গে যুদ্ধ করে। কাঁচা মরিচ রান্নায় ব্যবহারের চেয়ে কাঁচা খেলে ক্যাপসাইসিনের কার্যকারিতা থাকে বেশি। শাক-সবজি, সালাদ কিংবা অন্যান্য খাবারের সাথেও খেতে পারেন কাঁচা মরিচ।
কাঁচা মরিচের ঝালে পেটের অন্যান্য সমস্যারও ভয় থাকে না।
লেমনগ্রাস
লেমনগ্রাসে আছে সাইট্রোনিলা, যা প্রাকৃতিকভাবেই মশার হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। মশার জীবাণুর প্রতিরোধক হিসেবেও লেমনগ্রাস উপকারি। এটি খেলে শরীর থেকে এক ধরনের গন্ধ নিঃসরণ হয়। এই গন্ধ মশার জন্য বেশ প্রকট। লেমনপ্রাস সাধারণত স্যুপ, আচার ও থাইজাতীয় খাবারে ব্যবহার করা হয়।
টমেটো
থামামিনযুক্ত খাবার হলো টমেটো। এতে ভিটামিন বি১ থাকে প্রচুর পরিমাণে। থায়ামিন মশা প্রতিরোধে সাহায্য করে। টমেটো খেলে শরীর থেকে ঘামের সঙ্গে থায়ামিন নির্গত হয়। এর গন্ধ মশা সহ্য করতে না পেরে দূরে সরে যায়।
এছাড়া কোথাও মশা কামড় দিলে সেই অংশে টমেটো থেঁতো করে লাগানো যেতে পারে। এতে ত্বকের চুলকানির ভাব কমে যায়। মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত টমেটো খাওয়া ভালো।
টকজাতীয় ফল
লেবু, কমলালেবু, আঙুর, লটকনসহ নানা ধরনের টকজাতীয় ফল আছে। এই ফলগুলোতে নোটকাটন নামে এক ধরনের উপাদান আছে। এই উপাদান শুধু মশা না, যেকোন পোকামাকড়ের হাত থেকে সুরক্ষা দেয়।প্রতিদিন সকালে উষ্ণ গরম পানিতে মধু ও অর্ধেক লেবু মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। লেবু ও মধু দুটোই মশা প্রতিরোধক।
মটরশুটি ও মসুর ডাল
মটরশুটি ও মসুর ডালও টমেটোর মতো থায়ামিনে ভরপুর ও মশা প্রতিরোধক খাবার।
ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে যেসব খাবার পরিহার করবেন
মিষ্টিজাতীয় খাবার
মিষ্টিজাতীয় খাবার মশাকে আকৃষ্ট করে ও কামড় দেওয়ার সুযোগ পায়। তাই এই সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো পরিহার করুন। চা কিংবা কফিতেও কম চিনি ব্যবহার করুন।
অ্যালকোহল
মশা অ্যালকোহলের গন্ধ পছন্দ করে। তাই অ্যালকোহল পরিহার করুন। অন্তত এই সময় বাসায় অ্যালকোহলের বোতল না রাখাই ভালো।